একটি ভ্যান গাড়িতে পড়ে ছিল কয়েকজনের নিথর দেহ। পাশ থেকে আরও একটি লাশ তুলছিলেন পুলিশ সদস্যরা। সেই লাশ ঢাকার জন্য পুলিশ সদস্যরা ব্যবহার করেছিলেন ময়লা চাদর ও রাস্তার পড়ে থাকা ব্যানার। তারপরও ভ্যানের ওপরে ঝুলতে দেখা যায় নিথর দেহের হাত-পা-মাথা।
এমন বীভৎস ও লোমহর্ষক ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে । এ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। সেই ভিডিও দেখে প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের দাবি- ভ্যানে রাখা লাশগুলোই পরে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে আশুলিয়া থানার সামনে প্রত্যক্ষদর্শী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ দুইজনের স্বজনরা ভ্যানে থাকা লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করেন।
শহীদ আস-সাবুরের মা রাহেলা জান্নাত ফেরদৌস বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে অনেক গোলাগুলি হয়। সেখানে অনেকেই মারা গেছে। আমার ছেলে ৫ আগস্ট নিখোঁজ ছিল। পরে ৬ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানার একটি পুলিশের পিকআপে কয়েকজনের মরদেহ পাওয়া। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানায় যাই। তখন দেখি ওই গাড়িতে কয়েকটি আগুনে পুড়া লাশ। তখন আস-সাবুরের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সিম থেকে মরদেহ শনাক্ত করি। তবে এখন আমার ধারণা, ভ্যানে থাকা লাশগুলোই গুম করার জন্য আগুন দিয়েছিল।
অন্যদিকে শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ৫ আগস্ট আমার ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। পরে ৬ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানায় এসে দেখি পুলিশের গাড়িতে লাশ। তখন আমার ছেলের আইডি কার্ড দেখে নিশ্চিত হই আমার ছেলে সজল। সেখানে আরও ছয়টি লাশ ছিল বলে দাবি করেন শাহিনা।
তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, নিশ্চিহ্ন করার জন্য হত্যার পরে আগুন দিয়েছিল মরদেহগুলোতে।
অপরদিকে আশুলিয়া থানার সামনের চায়ের দোকানদার মনোয়ার বলেন, একটি ভিডিও দেখেছি আশুলিয়া থানার সামনে ভ্যানের মধ্যে অনেকগুলো লাশ রেখেছে। তবে পরের দিন সকাল বেশ কয়েকটি লাশ পুলিশের গাড়িতে পুড়া অবস্থায় দেখতে পেয়েছি।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভিডিওটি পর্যালোচনা চলছে। এছাড়া ঘটনাটি নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি