অবস্থা কিংবা অবস্থান যত প্রতিকুলই হোক মানুষ স্বপ্ন আর আশা নিয়ে বেঁচে থাকে, আগামীর দিকে এগিয়ে চলে। যে জীবনে আশা নেই, স্বপ্ন নেই সে জীবন থমকে যায়। করোনা মহামারী পুরো বিশ্বকে যখন বিকলাঙ্গ করে রেখেছে, মানব সভ্যতাকে হুমকির মুখে নিয়ে গেছে সে মুহূর্তে আমাদের মত অনুন্নত দেশে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি হতে যাচ্ছে এর চেয়ে ভাল খবর, ভাল আশা বা ভাল স্বপ্ন আর কি হতে পারে?
মিলিয়ন/বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আর বিশ্বের সব নামীদামি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জগৎসেরা বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরা দিনরাত কাজ করেও যেখানে গলদঘর্ম সেখানে আমাদের মত দেশের এমন উদ্যোগ/আবিষ্কার নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। ভ্যাকসিন তৈরি একটি অত্যন্ত জটিল, ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ দুরূহ প্রক্রিয়া যা নানা ধাপ অতিক্রম করে ব্যবহার উপযোগী করতে হয়। এ মুহূর্তে বিশ্বে শতাধিক করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে যার কোনটি প্রিকিলিনিক্যাল ধাপ, কোনটি প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ধাপে রয়েছে। সে তুলনায় গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিন কেবলমাত্র তৈরি প্রচেষ্টা প্রক্রিয়া ধাপে বলা যায়। এই ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগ করতে তাদের আরও অনেক লম্বা দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে যা অসম্ভবের কাছাকাছি হলেও অসম্ভব নয়।
গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিন কোন স্টেজে আছে, তারা কবে সেটি মানবদেহে প্রয়োগ উপযোগী করতে পারবে, কবে বাজারে নিয়ে আসতে পারবে কিংবা তাদের এই প্রচেষ্টা আদৌ সফল হবে কিনা তার কোনদিক বিবেচনা না করে যারা এর উদ্যোক্তা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই নিঃসেন্দহে অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। শতভাগ সফলতা আসুক বা না আসুক তাদের এই উদ্যোগে দেশের মানুষ বিশেষ করে তরুণ গবেষকরা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হবে, স্বপ্ন দেখতে শিখবে। “আমারাও পারি” এমন একটি ধারণা Develop করবে।
আমাদের দেশের মানুষ একটুখানি সুযোগ আর কাজ করার পরিবেশ পেলেই পৃথিবীর যে কোনো দেশের মানুষের চেয়ে সকল ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে সক্ষম। দেশ থেকে প্রতি বছর যে হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী বিদেশে পড়াশোনা করতে গিয়ে সফলতার সাক্ষর রাখছে সেটা তারই প্রমাণ। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক তাদের সফলতার সাক্ষর রাখছেন। সুযোগ আর পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশেই তারা আরও ভাল আবিষ্কার, ভাল গবেষণা করতে পারত। আমি স্বপ্ন দেখি আজ হোক কাল হোক একদিন দেশেই সে সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ভ্যাকসিন আবিষ্কারের প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক/বৈজ্ঞানিক সংশ্লিষ্টতা বা এর সাথে যতটুকু লজিষ্টিক সাপোর্ট দরকার তার কতটুকু গ্লোব বায়োটেকের আছে আমার জানা নেই। তবুও কামনা করি দুঃসাধ্য সাধনের এই মহৎ উদ্যোগ সফল হোক।
(ফেসবুক ওয়াল থেকে)
খুলনা গেজেট/এমএম