খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে সকল পণ্য আমদানিসহ কাস্টমস্ হাউজ প্রতিষ্ঠার দাবি

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, সাতক্ষীরা

দেশের অর্থনীতির খোলা জানালা ভোমরা স্থলবন্দরের নানা সমস্যা সমাধানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক আবেদনে এ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এজাজ আহমেদ স্বপন।

আবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার ২২ লাখ মানুষ আশায় বুক বেধেছে ভোমরা শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরের দাবিতে। ভোমরা শুল্ক স্টেশন পূর্ণাঙ্গ শুল্ক স্টেশনে রূপান্তরিত হলে জেলার উন্নয়ন হবে, মানুষের কর্মসংস্থান হবে, ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার হবে, দেশের উন্নয়নে ভোমরা শুল্ক স্টেশন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে এবং পদ্মাসেতুর সুফল পাবে দক্ষিণ জনপদের মানুষ।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ভোমরা শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে বাস্তবায়নকল্পে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নপূর্বক গত ২০১৩ সালের ১৮ মে সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রী কর্তৃক বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। বন্দরটি উদ্বোধনের পর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও কমিশনার (কাস্টমস্, এক্সাইজ ও ভ্যাট) খুলনা কর্তৃক অত্র শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতীত সকল পণ্য আমদানি অনুমতির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানান এবং আমদানিযোগ্য সকল প্রকার পণ্য আমদানির সুযোগ যাতে পেতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দর দেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমের আমদানি-রপ্তানির সিংহদ্বার। প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়ায় ভোমরা স্থলবন্দরে এখন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ভারতের কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের সাথে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব অন্য যে কোনো বন্দর অপেক্ষা অনেক কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সুবিধা বোধ করেন। এহাতে আমদানি ব্যয়ও সাশ্রয় হয়। কিন্তু পণ্যজট ও যানজট বিহীন এই বন্দরে অবকাঠামোগত সব সুবিধা থাকার সত্ত্বেও এর প্রতি কর্তৃপক্ষের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। বেনাপোল, সোনামসজিদ, হিলি, বুড়িমারী এবং বাংলাবান্ধা বন্দরের প্রতি কর্তৃপক্ষের যে আচরণ তা এখানে প্রতিফলিত না হওয়ায় আশানুরূপ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ বন্দর। অথচ ভোমরা শুল্ক স্টেশন দেশের সকল শুল্ক স্টেশনের থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ করছে।

যেহেতু অন্যান্য শুল্ক স্টেশনের তুলনায় ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দূরত্ব কলকাতা থেকে অনেক কম সেহেতু এ বন্দরের চাহিদাও অনেক বেশি। বর্তমানে এ বন্দরে সরকারি রাজস্ব তাহার নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য শুল্ক স্টেশনে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া সকল পণ্য প্রবেশের অনুমতি রয়েছে সেখানে ভোমরা শুল্ক স্টেশন দিয়ে মাত্র ৭৭টি পণ্য প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। এই ৭৭টি পণ্য অনুমতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের শুল্ক স্টেশনে শুধুমাত্র প্রশাসনিক জটিলতা ও সরকারি জনবলের সংকটে মাত্র ২৭-২৮টি পণ্য প্রবেশ করছে। আমাদের শুল্ক স্টেশনে যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদা কর্মকর্তার পদ থাকা সত্ত্বেও উক্ত পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তা নেই।

অন্যান্য সকল শুল্ক স্টেশন দিয়ে সাফটা চুক্তি অনুযায়ী মালামাল আমদানি করছে। কিন্তু ভোমরা শুল্ক স্টেশন দিয়ে সাফটা চুক্তি অনুযায়ী পণ্য আমদানি হওয়ার কথা থাকলেও তার ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। একই দেশে দ্বৈত নীতি অবলম্বন হচ্ছে।

আবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, ভোমরা স্থলবন্দর, ভোমরা, সাতক্ষীরার পক্ষপাতের কারণে বন্দরটির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যেমন-আমাদের বন্দরে প্রতি বছর ট্যারিফ হারের উপর ৫% বৃদ্ধি করে ট্যারিফ সিডিউল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আমাদের পার্শ¦বর্তী বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রতি বছর ট্যারিফ হারের উপর ৫% বৃদ্ধি করা হয় না। এমতাবস্থায়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নকল্পে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে আমদানিযোগ্য সকল পণ্য আমদানিসহ কাস্টমস্ হাউস প্রতিষ্ঠাপূর্বক ভোমরা শুল্ক স্টেশনের বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমূহ দ্রুত সমাধানের দাবি জানানো হয়।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের বিভিন্ন সমস্যাসমূহের মধ্যে রয়েছে অন্যান্য শুল্ক স্টেশনের ন্যায় নিষিদ্ধপণ্য ব্যতীত সকল পণ্য আমদানির অনুমতি প্রদান। রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রপ্তানিকৃত পণ্যের জন্য আলাদা ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ। সাপটা চুক্তি বাস্তবায়ন। জরুরিভিত্তিতে যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তার পদায়নসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বৃদ্ধিকরণ।

ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, বন্দরের সার্বিক উন্নয়নে স্থলবন্দর দিয়ে সকল পণ্য আমদানিসহ কাস্টমস্ হাউজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণ হলে ভোমরা স্থলবন্দর হবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সরকারের রাজস্ব আয়ের সিংহ দ্বার। তিনি এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!