চলতি অর্থবছর সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব আয়। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বন্দরে পণ্য আমদানিতে সরকারের রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬২ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বেশি হওয়াতে রাজস্ব আয় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে মনে করেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের জন্য চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে গেল আট মাসের অর্থাৎ জুলাই হতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৫৮৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। কিন্তু বন্দরটিতে ওই লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি। অন্যদিকে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যার প্রথম আট মাসের রাজস্ব আদায় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৪৯৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কিন্ত ওই লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে রাজস্ব আদায় হয় ৫০৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে রাজস্ব বেড়েছে ২৪৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আবু হাসান জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কম হলেও সরকারের রাজস্ব বেড়েছে। তবে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা যদি সবধরনের পণ্য আমদানি করতে পারতো তাহলে রাজস্ব আয় আরও কয়েকগুন বেশি হতো। কিন্তু এখানকার ব্যবসায়ীরা সকল প্রকার পণ্য আমদানি করতে পারেনা। তাছাড়া অন্যান্য বন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দর অনেক বৈষম্যের শিকার। বেনাপোল বন্দরে ফল আমদানিতে ব্যবসায়ীরা যে সুযোগ-সুবিধা পায় ভোমরাতে তা পায় না। অথচ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুবই সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর ভোমরা। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন ভালো তেমনি বন্দরে পণ্য বা যানজট থাকেনা। সহজে বন্দর ত্যাগ করতে পারে পণ্যবাহী পরিবহন গুলো।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্ব থাকা কাস্টমর্সের ডেপুটি কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত আট মাসের রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫৮৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৭৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৬২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখায় চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বন্দর ব্যবহারারী ব্যবসায়ী ও যাত্রী সাধারণ যাতে সর্বোচ্চ সেবা পায় সে দিকটাও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি কেউ অনৈতিক সুযোগ যাতে নিতে না পারে সে ব্যবহারের কঠোরভাবে খেয়াল করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টিএ