খুলনা, বাংলাদেশ | ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৬ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান গ্রেপ্তার
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২৫
  পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে খোরশেদ আলমের নিয়োগ বা‌তিল : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ভোট কাল, দিঘলিয়ায় কে হাসবেন বিজয়ের হাসি

একরামুল হোসেন লিপু

টানা ১৮ দিন প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে বিরামহীন প্রচারণা শেষ হয়েছে রবিবার (১৯ মে) মধ্যরাতে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। দিঘলিয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৩ টি গ্রামের ৫৪ টি ওয়ার্ডের ২৬৭ টি পাড়া/ মহল্লায় সর্বত্র সরব আলোচনা নির্বাচনে কে হাসবেন বিজয়ের হাসি? তবে বিজয়ের ব্যাপারে দু’ প্রার্থীই শতভাগ আশাবাদী।

এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনে ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেও লড়াই হবে মূলতঃ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম ও ৩ বার নির্বাচিত প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সহ-সভাপতি মল্লিক উদ্দিনের সংগে। শেখ মারফুল ইসলামের রাজনৈতিক উত্থান বিএনপি’র রাজনীতির মাধ্যমে আর মল্লিক মহিউদ্দিনের রাজনৈতিক উত্থান জাতীয় পার্টির রাজনীতির মাধ্যমে। পরবর্তীতে দু’জনই আওয়ামী লীগের যোগদান করে পদ পদবীতে থাকলেও বর্তমান তাদের দু’জনেরই আওয়ামী লীগে কোন পদ নেই।

সর্বশেষ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি খান নজরুল ইসলামকে ১ হাজার ৫৩৩ ভোটে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে শেখ মারুফুল ইসলাম ভোট পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ৫৬৪, খান নজরুল ইসলাম পেয়েছিলেন ১৬ হাজার ৩১ ভোট আর মল্লিক মহিউদ্দিন পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৯০১ ভোট।

ওই নির্বাচনে ভোটের ফলাফলে এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ আলোচনায় থাকা দুই প্রার্থী শেখ মারুফুল ইসলাম ও মল্লিক মহিউদ্দিনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিলো ২ হাজার ৬৬৩। এবারের নির্বাচনে খান নজরুল ইসলাম প্রার্থী না হলেও তিনি মল্লিক মহিউদ্দিনের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

শেখ মারুফুল ইসলাম তার বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন , গত নির্বাচনে ইশতেহার ঘোষণার সময় আমি বলেছিলাম, মানুষ শুধু জানে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের পরে আর কিছু জানে না। উপজেলা পরিষদের কি কাজ হয়? নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণের পাশে থাকে না, তাদের সুখ- দুঃখের খবর নেয় না। আমি মানুষের এই ধারণা পরিবর্তন করে দিবো। মানুষ যেন বুঝতে পারে এই উপজেলায় একজন চেয়ারম্যান আছে। নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আমার উপজেলায় ৬ টি ইউনিয়ন ৫৩ টি গ্রাম, ৫৪ টি ওয়ার্ডের ২৬৭ টি পাড়া / মহল্লায় গিয়েছি। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সুখ দুঃখের খবর নিয়েছি কুশল বিনিময় করেছি। তাদের চাহিদাগুলো আমি মেটানোর চেষ্টা করেছি। পাঁচ বছরে আমি নতুন ৮৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করেছি। পথের বাজার- সেনহাটী রাস্তা ২২ বছর সংস্কার হয় না। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর সংস্কার করেছি। অনেক কালভার্ট করেছি, অসংখ্য ইটের সোলিংয়ের রাস্তা করেছি। আমার কাছে সহযোগিতা না পেয়ে ফিরে এসেছে কেউ বলতে পারবেনা। ৮০ শতাংশ মানুষ আমাকে ভোট দিবে। নির্বাচিত হওয়ার পর ৫ টি বছর আমি দুপুরে বাড়ি ভাত খাইনি। অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসায় অনুদান দিয়েছি। আরো অনেকে প্রার্থী হয়েছেন আপনারা জেনে শুনে ভোট দিবেন।

এদিকে মল্লিক মহিউদ্দিন তার বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় দেওয়া বক্তব্যে বলেন, প্রচারণায় গেলে সবাই বলে তোমার ছেলে মেয়েরা কিছু করতে পারেনি। আমার একটা সুখের কথা আছে। সুখের কথা কি জানেন, আজকে আমি আমার বাড়িতে রং করতে পারি না। এটা আমার সুখের কথা। আমার ছেলেমেয়েরা কোন কিছু চাইনা। তারা ডাল দিয়ে ভাত খেতে পারে। আমার ছেলেমেয়েদের আলু ভর্তা ডাল দিয়ে ভাত খাওয়ানো শিখিয়েছি। আমার ছেলে মেয়েরা বলে আব্বু আপনাকে লোকেরা ভালোবাসে। আমার পুতির বউরা বলে আব্বা অমুক জায়গায় গিয়েছিলাম আপনার কথা বলে, মল্লিক মহিউদ্দিন ভালো লোক। এর চেয়ে বড় প্রাপ্য মানুষের জীবনে ভালো কিছু হতে পারে না।

আরেক নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, প্রত্যেককে রাজনৈতিক পূর্ন অধিকার দিতে হবে। আমি নির্বাচিত হলে সে যে দল করুক পূর্ণ অধিকার দেওয়া হবে। তাদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আমি আগামী দিনে সঠিকভাবে আপনাদের জন্য কাজ করবো। আমাদের রাজনৈতিক পূর্ণ অধিকার দিতে হবে সবাইকে। প্রত্যেককে , সে যে যে দল করুক ইনশাআল্লাহ পূর্ণ অধিকার ফিরে পেয়ে রাজনীতি করবে। আমি গত নির্বাচনে সামান্য কয়েক ভোটে হেরেছি, যা একটা ওয়ার্ডের ভোট। মানুষের ভালোবাসায় আমি তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি।

৬টি ইউনিয়ন নিয়ে দিঘলিয়া উপজেলা গঠিত। এর মধ্যে খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন আড়ংঘাটা ইউনিয়ন ও খানজাহান আলী থানাধীন যোগীপোল ইউনিয়ন দিঘলিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। ৬ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৪৮। ২১ মে সকাল আটটা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল ১০ টা থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পৌঁছানোর কাজ শুরু হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!