জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন বেশ কয়েকজন সচিব। ভোটের দিন কেউ যাতে অপপ্রচার চালাতে না পারে, সে জন্য ফেসবুক বন্ধের সুপারিশ করেছেন তাঁরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে ওই সভা হয়। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের মতামত দেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁদের বেশ কয়েকজন ভোটের দিন ফেসবুক বন্ধ রাখার পক্ষে মত দেন বলে বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত একজন সচিব বলেন, ভোটের দিন ফেসবুক চালু রাখলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। একটি ঘটনাকে বিকৃত করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে পারে গুজব রটনাকারীরা। সে জন্য ওই সভায় বেশ কয়েকজন সচিব ফেসবুক বন্ধের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ভোটের দিন ফেসবুক বন্ধ রাখার মতামত এসেছে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সামনে এ বিষয়ে বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া ফেসবুক বন্ধের বিষয়টি তুলে ধরেন। পরে কয়েকজন সচিব এ প্রস্তাবের পক্ষে মতামত দেন। তাঁদের আলোচনায় বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
ভোট ঘিরে ফেসবুকে অপপ্রচার বন্ধের বিষয়ে গত আগস্টে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মূল কোম্পানি মেটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন কেউ যাতে অপপ্রচার, বিদ্বেষ, সহিংসতা ও বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ওই বৈঠকে মেটা কর্তৃপক্ষ বলেছে, নির্বাচনের সময় অপপ্রচার রোধে তারা কাজ করতে চায়। নির্বাচনের আগে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আন্তমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ জানান, ঋণখেলাপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করার লক্ষ্যে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ, সংকলন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হবে। তিনি বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। ঋণখেলাপিরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো যাতে সজাগ দৃষ্টি রাখে, সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।