খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

সাতক্ষীরা সদরের ভূমি সহকারি কর্মকর্তাসহ ৬ জনের নামে দুদকে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় সরকারি কর্মকর্তার সহয়তায় উপাধি পরিবর্তন পূর্বক ভিন্ন উপাধি দেখিয়ে জনৈক ব্যক্তির নামে কাগজপত্র সৃষ্টি করে অন্যের সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে সদর ভূমি সহকারি কর্মকর্তাসহ ৬ জনের নামে দুদকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শহরের কামালনগর গ্রামের বাবর আলী মোড়লের ছেলে জিয়াদুল ইসলাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দূর্ণীতি দমন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল সাতক্ষীরায় এ মামলা দায়ের করেন। আদালত শুনানি শেষে তদন্ত পূর্বক আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চেয়ারম্যান দূর্ণীতি দমন কমিশন (দূদক) কে নির্দেশ দিয়েছেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সাতক্ষীরা শহরের কাছারিপাড়ার বাসিন্দা রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক এম এম মজনু খোকা। এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, শহরের কামালনগর এলাকার মৃত নবির গাজীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, জিয়ারুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) কামরুল ইসলাম।

মামলার আর্জিতে বাদী অভিযোগ করেছেন, পলাশপোল মৌজার সিএস ৮৯২ খতিয়ানের ২একর ৪৭ শতক জমির মালিক জনাব আলী সরদার ও জসিম সরদার। জনাব আলী সরদার ১৯৪৭ সালে ১৯১৯ নং রেজিষ্ট্রি দলিল মুলে তার স্ত্রী মোহরজান বিবির নিকট ২৭ শতক জমি হস্তান্তর করেন। সেই হিসেবে মোহরজান এসএ ৯৩১ খতিয়ানের জমির ২৭ শতক জমির মালিক হন। বাকি ২একর ৬ শতক জমি জনাব আলী ও জসিমের ছেলে ছফেদ আলী সরদারের নামে এসএ ৯৩০ খতিয়ানের জমি রেকর্ড হয়। জনাব ও ছফেদ সরদার এসএ মালিক হিসেবে ৬৪ সালে ২৩০৪ নং রেজিষ্ট্রি দলিল মুলে জনৈক বেলাল রহমানের নিকট বিক্রয় করেন। বেলাল রহমান উক্ত জমির মালিক হিসেবে ১৯৬৭ সালে ৪৯৩২ নং রেজিষ্ট্রি দলিল মুলে বারী খানের নিকট বিক্রয় করেন। সেই হিসেবে পর্যায়ক্রমে সরদার বংশের লোকের নিকট থেকে ১৯৯৭ সালের ৯৮৯ নং রেজি: দলিল মুলে বাদী শহরের কামালনগর গ্রামের জিয়াদুল ও তার স্ত্রী মোট জমি থেকে ৪০ শতক জমি ক্রয় পূর্বক মালিক হন। এরপর তিনি উক্ত জমির উপর খাজনাদি পরিশোধ করে দখলে থাকেন। কিন্তু বাইপাস সড়ক নির্মাণের লক্ষে উক্ত জমির ২০ শতাংশ সরকার অধিগ্রহণ করা হয়। যার এল এ কেচ ০১/১০-১১। বাদী নোটিশ পেয়ে অক্ষর জ্ঞানহীন থাকায় ১নং আসামী এমএম মজনুকে মহরার হিসেবে নিযুক্ত করেন।

মহরার এমএম মজনু তার মক্কেল জিয়াদুলের নিকট হতে কাগজপত্র বুঝে পেয়ে নিজেই সমুদয় জমি আত্মসাৎ করার লক্ষে গাজী বংশের রফিকুলের পূর্ব পুরুষ রুপচাঁদ নামের আরেক ব্যক্তি উক্ত কামালনগরে থাকায় তাদেরকে প্রভাবিত করে শরিক হিসেবে ওই জমির মালিক হিসেবে উদ্ভুদ্ধ করে গাজী বংশের ওয়ারেশ কায়েম সংগ্রহ করে উক্ত জমির দাবিদার তৈরি করেন। সেকারণে মোহরার মজনু এসএ ৯৩০ খতিয়ানের জমির মালিক সরদারকে গাজী বানানোর জন্যে ষড়যন্ত্রমুলক খতিয়ান সংগ্রহ করার লক্ষে নিজে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি সহকারি কমিশনার ভুমি সদর এর নিকট প্রেরণ করলে তিনি সদর পৌর ভুমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের নিকট খতিয়ানের সঠিক কপি চেয়ে পাঠান।

এরপর মোহরার মজনু এবং ভুমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম অবৈধভাবে দফারফা করে এবং যোগসাজসে এসএ ৯৩০ খতিয়ানের মালিক ছফেদ আলীকে বাদ দিয়ে সরদার পদবীকে বাদ দিয়ে কেবল মাত্র জনাব শব্দটি লিখে সিএস অনুযায়ী সমুদয় জমির পরিমান ২একর ৩৪ শতক উল্লেখ পূর্বক ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি সঠিক আছে বলে রেকর্ড রুমে প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই অনুযায়ী রেকর্ড রুমে খসড়া প্রতিবেদনটি এখন পর্যন্ত অরিজিন্যাল হিসেবে সংরক্ষণ পূর্বক নকল সরবরাহ করা হচ্ছে। এরপর জমির মূল মালিক রুপচাদ সরদারের ওয়ারেশগনকে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি ও ৮নং ওয়ার্ড কমিশনার শফিকুল ইসলাম বাবু রুপচাদ সরদার হিসেবে ওয়ারেশ কায়েম সার্টিফিকেট প্রদান করেন। বাদী গত ২৮ সেপ্টেম্বর ৬নং আসামী নায়েব কামরুল ইসলামের অফিসে গেলে নায়েব তার কাছে দুই লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। এই ঘুষের বিনিময়ে খতিয়ান সংশোধন করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে বাদী রাজি না হয়ে এবং অর্থ না থাকায় তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তার ঘুষ দাবী এবং ষড়যন্ত্রের আরেক ভাগিদার হিসেবে চিহ্নিত পূর্বক মুল ষড়যন্ত্রকারি এমএম মজনু খোকাসহ এরসাথে সংশ্লিষ্ট আরো ৪জন মোট ৬জনকে আসামী করে দূদক আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা মতে এই মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!