তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৮৯৪ জনের। আর সিরিয়ায় মারা গেছে ১ হাজার ৯৩২ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর আল–জাজিরা ও দ্য গার্ডিয়ানের।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে, দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৯৪ জনে। অপরদিকে সিরিয়ায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১ হাজার ২০ জন বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর বাসিন্দা বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল হোয়াইট হেলমেটস।
তুরস্কের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার এলাকায় এখন ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা। এসব এলাকায় ৫ হাজার ৭৭৫টি ভবন ধসে পড়েছে। আর ভূমিকম্পে সিরিয়ায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দেশটিতে ১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে বেশি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, তুরস্ক–সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মানচিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, এসব এলাকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কারণে সেখানকার সবাই কোনো না কোনোভাবে সংকটে পড়েছেন। দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাখো মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে আছেন।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ। আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এর পর থেকে দফায় দফায় আরও কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। এতে দুই দেশে ধসে পড়েছে হাজার হাজার ভবন। এসব ভবনের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী ও সাধারণ মানুষ। তবে উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টি।
দেশটির এ দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছে, ভূমিকম্পে দুই দেশে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।