খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

ভুঁড়ি কমাতে করণীয়

লাইফ স্টাইল ডেস্ক

ওবেসিটি অর্থ স্থূলতা, মুটিয়ে যাওয়া। আর অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি মানে পেটের আকৃতি বেড়ে যাওয়া। সোজা বাংলায় যাকে বলে ভুঁড়ি। কিন্তু ভুঁড়ি কি একটা রোগ? হ্যাঁ, দশাসই একটা ভুঁড়ি থাকলে তাকে একটি রোগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় এখন। কারণ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা শারীরিক–মানসিক জটিলতা ও রোগবালাই।

কেউ আদর্শ ওজনের অধিকারী কি না, তা জানার জন্য যে পরিমাপ ব্যবহার করা হয়, তাকে বলে বিএমআই। কারও উচ্চতার বর্গফল (মিটারে) দিয়ে ওজনকে (কিলোগ্রামে) ভাগ করলে পেয়ে যাবেন এই বিএমআই।

বিএমআই ১৮ দশমিক ৫ থেকে ২৯ দশমিক ৯ পর্যন্ত স্বাভাবিক। ৩০–এর ওপর গেলে আপনি ওভারওয়েট বা ওজনাধিক্যে ভুগছেন। আর ৩৫–এর ওপর চলে গেলে আপনি ওবেসিটি বা স্থূলতায় ভুগছেন। এশীয়দের জন্য এই বিএমআইয়ের পরিমাপ আরও কম ধরা হয়।

কিন্তু দেখা গেছে, এশীয় বংশোদ্ভূত মানুষের বিএমআই স্বাভাবিক বা এর কাছাকাছি হলেও পেটের মাপ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশি। আর কেবল এই পেটের মাপ বেড়ে যাওয়ার কারণেই তাঁরা শিকার হচ্ছেন নানা রোগের। আপনার পেটের মাপ যদি ৯০ সেন্টিমিটার (যদি পুরুষ হোন) বা ৮০ সেন্টিমিটারের (যদি নারী হোন) বেশি হয়ে থাকে, তবে আপনি অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটিতে ভুগছেন।

দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের সামগ্রিক ওজন বা বিএমআই অত বেশি না হলেও কেবল পেটের আকৃতির জন্য হৃদ্‌রোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তাই আমাদের অন্যতম প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা যায় এই ভুঁড়িকে।

কারও পেটের মাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে ক্ষতিকর চর্বি বেশি ইত্যাদি থাকলে তাঁর মেটাবলিক সিনড্রোম আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। মেটাবলিক সিনড্রোম হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদির অন্যতম কারণ।

ভুঁড়ি থাকা মানেই পেটে চর্বি বেশি। পেটের ভেতরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গায়ে লেগে থাকা চর্বিও বেশি, যাকে ভিসেরাল ফ্যাট বলে। এই ভিসেরাল ফ্যাটই নানা রোগের সৃষ্টি করে। যাঁদের অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি বা ভুঁড়ি আছে, তাঁদের যেসব জটিলতা হওয়া অবশ্যম্ভাবী, সেগুলো হলো টাইপ–২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির আধিক্য, হৃদ্‌রোগ বা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ফ্যাটি লিভার, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্য, বন্ধ্যত্ব ইত্যাদি।

ভুঁড়ি কমাতে কী করবেন? প্রথমত, সচল জীবন যাপন করুন। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করুন। এর বাইরে প্রতিদিন নানা ধরনের কায়িক শ্রম করুন। দৈনিক আট হাজারের বেশি স্টেপস বা পদক্ষেপ আপনাকে ওবেসিটি থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যে ওভারওয়েট হয়ে আছেন, তাঁদের দরকার দৈনিক ১১ হাজার স্টেপস।

দ্বিতীয়ত, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার কমিয়ে দিন। উচ্চ শর্করা এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়াতে হবে। বেশি করে খেতে হবে সবুজ ও রঙিন শাকসবজি, তাজা ফলমূল ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিন। তৃতীয়ত, বসে থাকার সময় কমান। কমান স্ক্রিন টাইম। চতুর্থত, রাতে অন্তত ছয়-সাত ঘণ্টা ঘুম দরকার। রাতজাগা বন্ধ করুন। জীবনাচারের এসব অভ্যাস ছোটদের জন্যও প্রযোজ্য, যা তাঁদের ভবিষ্যতে মুটিয়ে যাওয়াকে প্রতিরোধ করবে।

ডা. তানজিনা হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!