খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

ভাস্কর্যবিরোধী প্রচারের অভিযোগে বাবুনগরীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

গেজেট ডেস্ক

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করা হয়েছে।

ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার আবেদন করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বেলা ১১টার দিকে মামলা গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হয়। আদালতে বিচারক সত্যব্রত শিকদার এ বিষয়ে আদেশ দেননি।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৩ ও ২৭ নভেম্বর ঢাকার ধোলাইপাড়, বিএমএ মিলনায়তন ও হাটহাজারী মাদ্রাসায় আসামিরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন। এতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল।

অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত মমিনুল হক ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে বলেছিলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে তারা বঙ্গবন্ধুর সুসন্তান হতে পারে না। এই মূর্তি স্থাপন বন্ধ করুন। যদি আমাদের আবেদন মানা না হয়, আবারও তৌহিদী জনতা নিয়ে শাপলা চত্বর কায়েম হবে।

একইদিন অভিযুক্ত সৈয়দ ফয়জুল করিম ধোলাইখালের নিকটে গেন্ডারিয়া নামক স্থানে মুসুল্লিদের হাত উঁচু করে শপথ পড়িয়ে নেন যে, ‘আন্দোলন করব, সংগ্রাম করব, জেহাদ করব। রক্ত দিতে চাই না, দেয়া শুরু করলে বন্ধ করব না। রাশিয়ার লেলিনের বাহাত্তর ফুট মূর্তি যদি ক্রেন দিয়ে তুলে সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে তাহলে আমি মনে করি শেখ সাহেবের এই মূর্তি আজ হোক, কাল হোক খুলে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করবে।’

অভিযুক্ত জোনায়েদ বাবুনগরী হাটহাজারীতে এক সভায় বলেন, ‘মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহলে দেশে কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না।’ তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘ভাস্কর্য নির্মাণ পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটবে এবং ওই ভাস্কর্য ছুড়ে ফেলা হবে।’

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে ইসলামভিত্তিক দলগুলো আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার রাতের আঁধারে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় মাদরাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার দুই মাদ্রাসা ছাত্র পুলিশকে জানিয়েছেন, মাওলানা মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনায় দেশব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভাস্কর্যবিরোধীদের রুখে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ।

এর আগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বিরোধিতা করে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২০বি, ১৫৩ ও ১২৪ক ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়। রোববার বিকালে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এই আবেদন দেয়া হয়।

মো. জিশান মাহমুদ বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৯৬ ধারার বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!