নির্যাতন ও নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম দফা স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভাসানচরে পৌঁছেছে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে ৫টি জাহাজে করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে যাত্রা করে বেলা ২টার দিকে ভাসানচরে পৌঁছায় রোহিঙ্গারা। নৌ-বাহিনীর ৪টি এলসিইউ এবং সেনাবাহিনীর ১ জাহাজে ভাসানচর পৌঁছান ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা।
নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তরের অংশ হিসেবে গতকাল কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামে আনা হয় রোহিঙ্গাদের। এরপর তাদের রাখা হয় অস্থায়ী ট্রান্সজিট ক্যাম্পে। সকাল ৯টা থেকে বোট ক্লাব থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরগামী জাহাজে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মালপত্রও জাহাজে তুলে দেয়া হয়।
প্রথম ধাপে ভাসানচর যাওয়া রোহিঙ্গাদের রাখা হবে ৫ থেকে ১১ নম্বর ক্লাস্টারে। আপাতত কয়েক মাস তাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করবে একটি এনজিও। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিতে আগেই ভাসানচর পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের নিজে কাজ করা ২২টি এনজিও কর্মীরাও সেখানেও পৌঁছান।
এর আগে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দু’বার চুক্তি ভেঙ্গেছে মিয়ানমার। নিজ দেশের নাগরিকদের ফেরৎ নেয়নি মিয়ানমার। তাই আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গাদের একটু ভালো রাখবার দায়িত্বটা নিতে হয়েছে বাংলাদেশকেই। তাই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা। আশ্রয়ণ প্রকল্পে আছে পাকা ঘর, বিদ্যুৎ, স্কুল, সার্বক্ষণিক চিকিৎসা আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
২০১৭ সালে আগস্টের শেষ দিকে অব্যাহত দমন-নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরমধ্যে দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয়। এ লক্ষ্যে নোয়াখালীর ভাসানচরে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরি করা হয়।
খুলনা গেজেট / এমএম