খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

ভাষা আন্দোলনের কবি প্রায়ত শেখ সামছুদ্দিনের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

ভাষা আন্দোলনের কবি প্রায়ত শেখ সামছুদ্দিনের পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন জেলা প্রশাসন। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন বেলা ১১ টায় বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুরস্থ কবির বাগিতে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। এসময় তিনি কবির কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারের খোজ খবর নেন। পরে কবির বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন খোকনকে একটি ইজিবাইক, তিনবান টিন ও নগদ ৯ হাজার টাকা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

এসময়, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মাদ রিজাউল করিম, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ শাহিনুজ্জামান, বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন টগরসহ কবির স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। পরে দেলোয়ার হোসেন খোকনকে সুপারির ব্যবসা বৃদ্ধি করার জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন টগর।

দীর্ঘদিন পরে হলেও নগদ অর্থসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সম্মান পেয়ে খুশি নিহতের পরিবার ও সন্তানরা।

কবির ছেলে দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পরে খুবই আর্থিক কষ্টে বেঁচে রয়েছি আমরা। সাইকেলে করে বাজারে বাজারে সামান্য সুপারি বিক্রি করে আমার সংসার চলে। মাঝে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে চলাফেরা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে আমার। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে যে সহযোগিতা করা হল এজন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। আর্থিক বিষয়ের থেকে আমাদের কাছে বাবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বড় ব্যাপার। যদি বাবা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় তাহলে শেষ বয়সে আমি অন্তত শান্তিতে রতে পারব।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারণকবি সামছুদ্দিনের পরিবারকে নগদ অর্থ, টিন ও তার ছেলের ব্যবসার জন্য একটি ইজিবাইক প্রদান করেছি। জেলা প্রশাসনের এই সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, রাষ্ট্রভাষা গানের শ্রষ্ঠা চারণকবি শেখ সামছুদ্দিন। ভাষা আন্দোলনে জনমত সৃষ্টির ক্ষেত্রে তার অবদান রয়েছে। এবিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব। যাতে তিনি ও তার পরিবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে পারেন।

“রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন করিলি ও বাঙ্গালী—রে, ভাইরে-ঢাকার শহর রক্তে ভাসালী। যারা হইত পূর্ব বাংলার জিন্না লিয়াকত, বেছে মারা হইল জাতির ববিষ্যত। রাষ্ট্রভাষা বাংলা হবে এইতো তাদের গান, নায্য দাবি করিয়া ভাইরে খুয়াইলী পরান।” মহান ভাষা আন্দোলনের আত্মত্যাগের মহত্ত্ব তুলে ধরে “রাষ্ট্রভাষা” নামের মর্মস্পর্শী এই গান রচনা করেন বাগেরহাটের চারণ কবি শেখ সামছুদ্দিন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ঢাকার রাজপথে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিলের সময় পাক সেনাদের নির্বিচার গুলিতে ছাত্র নিহত হওয়ার দিন রাতেই তিনি এই গানটি রচনা করেন। পরবর্তীতে তার গানটি এত জনপ্রিয় হয় যে, সকলের মুখে মুখে ছড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে নানা রোগে ভুগে ১৯৭৪ সালে তিনি মারা যান তিনি। তার শামসুদ্দিনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যে বড় মেয়ে লাইলি বেগম মারা গেছে বছর খানেক আগে। ছোট ছেলে মুকুল শেখ ঢাকায় চাকুরী করেন। বাড়ীতে থাকেন বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন খোকন।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!