ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা দুই শতাধিক আরোহীর নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে সেখানকার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে বিমানটি রওনা দেয়। উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরই এটি বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানটিতে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে অলৌকিকভাবে এক যাত্রী বেঁচে গেছেন।
এদিকে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২০৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৪১ জন আহতের চিকিৎসা চলছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছেন আহমেদাবাদ সিটি পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার তীব্রতা বিবেচনা করে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে ধ্বংসাবশেষ এবং আগুনের অবস্থা বিবেচনা করে পরিস্থিতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং রয়ে গেছে।
বিবিসি বলছে, লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরগামী ওই উড়োজাহাজে যে ২৪২ জন আরোহী ছিল, তার মধ্যে দুইজন পাইলট ও ১০ জন ক্রুও ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, একজন কানাডার ও ৭ জন পর্তুগালের নাগরিক রয়েছে বলে জানিয়েছে এয়ার ইনডিয়া। বাকিরা সবাই ভারতীয় নাগরিক।
বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই বিমানবন্দরের বাইরে একটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ওপরে আছড়ে পড়ে। এতে সেখানকার শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের অনেক হতাহত হন। এতে এখন পর্যন্ত পাঁচ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
বিমানটি পাখির আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে
ভারতের এ ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের পর অনেকটা দুলতে দুলতে বিমানটি এগিয়ে যাচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরই এটি বিধ্বস্ত হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার এ বিমানটি সেখানকার একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আঘাত হানে।
বিমান চলাচল বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, বিমানটি উড্ডয়ন করার সঙ্গে সঙ্গে সম্ভবত এটিতে কয়েকটি পাখি আঘাত হেনেছিল। এতে করে পূর্ণ উড্ডয়নের জন্য যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন ছিল বিমানটি সেটি হারিয়ে ফেলেছিল। ফলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও বিমানটি আর উপরের দিতে নিতে পারেননি পাইলট।
সাবেক ক্যাপ্টেন সৌরভ ভাটনাগর নামের এ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “প্রথমত মনে হচ্ছে, একাধিক পাখির ধাক্কায় দুটি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যায়। উড্ডয়নটি নিখুঁত ছিল। কিন্তু ল্যান্ডিং গিয়ারটি উপরে তোলার আগেই বিমানটি নিচে নামা শুরু করে। এমনটি সাধারণত হয় যখন ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় অথবা বিমান আকাশে থাকার সামর্থ হারিয়ে ফেলে। তদন্তে আসল কারণ বেরিয়ে আসবে।”
তিনি আরও বলেন, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে উড্ডয়নটি বেশ সুন্দরভাবে হয়েছিল। এছাড়া বিমানটিও নিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে নেমে আসে। পাইলট মে ডে কল করেছিলেন। যার অর্থ ওই সময় জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
সূত্র: নিউজ-১৮, এনডিটিভি
খুলনা গেজেট/এএজে