ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ১৩ বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে নাগপুরের রেল স্টেশনের একটি ট্রেন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং ভারতে পাচারের শিকার হয়েছিলেন।
আটককৃত ১৩ বাংলাদেশির মধ্যে ৯ জন নারী, তিন শিশু এবং একজন অল্পবয়সী যুবক রয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক একটি মানব পাচারকারী চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে নাগপুর পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং মহরাষ্ট্র অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিওবদওেন এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটককৃত বাংলাদেশিরা ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং ট্রেনে করে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে মুম্বাই যাওয়ার পথে নাগপুর রেল স্টেশন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এদিকে আটকের পর ওই ১৩ বাংলাদেশিকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নাগপুর পুলিশের ডিসিপি (ক্রাইম) চিন্ময় পন্ডিত বলছেন, ‘আটককৃতদের মধ্যে দুই বা তিনজন নারী রয়েছেন, যাদেরকে ভারতে প্রবেশের পর গৃহপরিচারিকার কাজে যুক্ত করতে গুজরাটের সুরাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আর বাকিদেরকে দিনমজুর হিসেবে কাজে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের।’
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নারী ও শিশুসহ এক যুবককে ট্রেনে করে মুম্বাই হয়ে জোর করে গুজরাটে নেওয়া হচ্ছে বলে গোপন খবর পান নাগপুরের পুলিশ কমিশনার অমিতেশ কুমার। এরপর তিনি ভুক্তভোগীদের উদ্ধারের নির্দেশনা দেন এবং মঙ্গলবার রাতে কৌশলে তাদেরকে নাগপুর স্টেশন থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্ধারকৃত ১৩ বাংলাদেশির সবার বাড়িই যশোর জেলায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা। তাদের মধ্যে এক নারীকে পাচারকারীরা পতিতাবৃত্তির জন্যও পাঠিয়েছিল বলে জিজ্ঞসাবাদে বেরিয়ে এসেছে।
উদ্ধারকৃত নারীদের মধ্যে দু’জন বেশ অল্পবয়সী, তাদের একজন পেশায় প্রকৌশলী। তারা পতিতাবৃত্তিতে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভারতে প্রবেশের আগে ওই দুই নারীর একজন বাংলাদেশেও পতিতাবৃত্তিতে জড়িত ছিল বলে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
এছাড়া আটককৃতদের কাছ থেকে আধার কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে সেগুলো নকল হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিন দু’য়েক আগে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে ওই ১৩ জন। পরে কলকাতার হাওয়ায় একটি হোটেলে দু’দিন তারা অবস্থান করে। পাচারকারীরা তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ হাজার ভারতীয় রুপি করে নেয় এবং তারাই পরে ওই ১৩ জনকে মুম্বাইয়ের ট্রেনে উঠিয়ে দেয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই