খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

ভারতে চিকিৎসার নামে বহু বাংলাদেশির কিডনি অপসারণ! চিকিৎসক গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশ ও ভারতের কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ভিত্তিক ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। ৫০ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের নাম ডা. বিজয়া কুমার।

প্রাথমিক অভিযোগে জানা গেছে, ওই নারী চিকিৎসক রাজধানীর সংলগ্ন নয়ডা শহরে ‘যথার্থ’ নামের একটি হাসপাতালে অপারেশনের নামে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ জন ব্যক্তির কিডনি সরিয়েছেন। কিডনি পাচারকারী দলের সদস্য হিসেবে এসব অপারেশন করেছেন তিনি। যাদের কিডনি তিনি সরিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ের মধ্যে হয়েছে এসব অপারেশন।

পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সক্রিয় এই চক্র মধ্যবর্তী ব্যক্তি বা দালালদের মাধ্যমে দরিদ্র বাংলাদেশিদের অর্থের লোভ দেখিয়ে নয়াদিল্লির আশপাশের কিছু হাসপাতালে নিয়ে আসত। সেসব হাসপাতালে চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বাংলাদেশিদের কিডনি অপসারণ করতেন।

দিল্লিতে একাধিক কিডনি পাচারকারী চক্র সক্রিয়। ডা. বিজয়া কুমারি যে চক্রটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, সেই চক্রের অধিকাংশই বাংলাদেশি। গত মাসে নয়াদিল্লি থেকে এই চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। তাদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো ভারতেও অর্থের বিনিময়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে, কোনো ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় কাউকে কিডনি বা অন্য কোনো প্রত্যঙ্গ প্রদান করতে চান, তাহলে তা বৈধ। এক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতার নাম-পরিচয় ও অন্যান্য তথ্য কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হয়।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটি কেবল বাংলাদেশ থেকে আসা ভিকটিমদের কিডনি অপারেশন করত এবং দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে এসব অপারেশন সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুয়া নথি প্রদান করত। সেসব নথিও জব্দ করেছে পুলিশ।

ডা. বিজয়া কুমারি নয়াদিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এবং কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ক সার্জন। প্রায় ১৫ বছর আগে জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলোতে যোগ দেন তিনি।

অ্যাপোলোর পাশাপাশি নয়ডার ‘যথার্থ’ হাসপাতালের ভিজিটিং কনসালটেন্ট ও সার্জনও ছিলেন ডা. বিজয়া কুমারি। ওই হাসপাতালের অতিরিক্ত মেডিকেল সুপারিটেন্ডেন্ট সুনীল বালিয়ান জানিয়েছেন, যেসব ব্যক্তির কিডনি তিনি অপসারণ করেছেন, তাদের কেউই ওই হাসপাতালের রোগী ছিলেন না। ভিজিটিং কনসালটেন্ট হিসেবে তিনি রোগী ভর্তির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ করতে পারতেন। যে ১৫-১৬ জন বাংলাদেশির কিডনি তিনি অপারেশন করেছেন, তাদের সবাইকে তার সুপারিশের ভিত্তিতেই ভর্তি করা হয়েছিল।

ডা. বিজয়া কুমারি ব্যতীত ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের আর কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!