সর্বনাশা কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে ভারতের কৃষক-ক্ষেতমজুররা আমরণ অনশনের ডাক দিল। সারা ভারত কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় মোর্চার পাঞ্জাবের দায়িত্বশীল কৃষক নেতা গুরুমত সিং বলেন, দু’বার বনধ পালন করা হয়েছে সারাদেশে। সোমবার সারাদেশে পথ অবরোধ হবে। সড়কপথ, রেলপথ, বিমানপথ অচল করে দেওয়া হবে। আর তার ফাঁকেই উনিশে ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি নেওয়া হবে । তিনি রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, পাঞ্জাবের কৃষক ব্রিটিশ আমলে জেনারেল ডায়ারের জালিওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডকে ভয় পায়নি। তাই আমরা আর কোনো আপসে নয়। লড়াই-আন্দোলন করেই দাবি আদায় করতে চাই । কোনো সেনাবাহিনীর গুলি আমাদেরকে রুখতে পারবে না। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না।
এদিন গুরুমত সিং ভারতের বিজেপি সরকারকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাঁচশো কৃষক সংগঠন, চব্বিশটি সর্বভারতীয় দল ও শতাধিক ভ্রাতৃপ্রতীম গণসংগঠন রয়েছে । তাই সারা ভারতের কৃষক-ক্ষেতমজুররা তাদের মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছে। কৃষক-ক্ষেতমজুরদের এই আন্দোলন আঠারো দিনে পড়েছে। পিছিয়ে আসার কোনো ব্যাপার নেই। আন্দোলন তুষের আগুনের মতো দাউ দাউ করে জ্বলবে।
এর আগে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক-ক্ষেতমজুরদের লড়াই- আন্দোলন-বিদ্রোহ দমন করতে বিজেপি সরকার রাজধানী দিল্লির রাস্তায় সেনা নামিয়েছে বলে অভিযোগ করে আন্দোলনরত কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় মোর্চা। মোর্চার পক্ষ থেকে আহ্বায়ক হান্নান মোল্লা, অতুল আনজান ও যোগেন্দ্র যাদব বলেন, এই আন্দোলন দেশের আশি শতাংশ কৃষিজীবী মানুষের। কোনোভাবেই পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। ভারতের আমজনতা এর পাশে রয়েছে। জীবন- জীবিকার প্রশ্নে এটি আরো একটি স্বাধীনতা আন্দোলন। তাই পিছিয়ে আসার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজেপি সরকারের সঙ্গে সব ধরনের আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই সরকারের সঙ্গে তখনই আলোচনা করব যখন বিজেপি সরকার এই কৃষিআইন প্রত্যাহার করবে। এই আইন ভারতের কৃষকের সবধরণের স্বার্থ চুরমার করে দেবে। এই আইন ভারতে দেশি- বিদেশী কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করবে। এই বিজেপি সরকার আদানি-আম্বানিদের সরকার।
শনিবার দিল্লি সংলগ্ন দুটি জাতীয় সড়ক মহামিছিলে অবরুদ্ধ হয়। সোমবার অর্থাৎ চৌদ্দই ডিসেম্বর সমগ্র ভারতে রাস্তা অবরোধ ও মহামিছিল হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম