খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা
  শেখ রেহানার স্বামী-দেবরসহ ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত
  হাসিনা-জয়সহ ১৮ জনের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ আদালতের

ভারতের সিন্ধু চুক্তি স্থগিত, যে পদক্ষেপ নিচ্ছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুক হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। শুধু তাই নয় গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানি সরবরাহ স্থগিত করেছে ভারত। এ অবস্থায় নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের আইন ও বিচার মন্ত্রী আকিল মালিক গতকাল সোমবার রয়টার্সকে বলেন, ইসলামাবাদ পৃথক তিনটি আইনি পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে। যার মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বিষয়টিও রয়েছে।

তিনি বলেন, স্থায়ী সালিশি আদালত অথবা হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৬০ সালে ভিয়েনা কনভেনশন আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

মালিক বলেন, আইনি পদক্ষেপ নিয়ে পরামর্শ ইতোমধ্যে শেষ। ভারতের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মামলা করা হবে, সে বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ভারতের পানি সম্পদ কর্মকর্তারা।

গত সপ্তাহে কাশ্মীরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় হওয়া সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। এই চুক্তি ততদিন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান তার সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদের সমর্থন পরিহার না করবে।

তবে কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। ওই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছে। ভারতের দাবি, হামলায় জড়িতদের মধ্যে তিনজনকে তারা চিহ্নিত করেছে। যারা পাকিস্তান থেকে এসেছে।

এদিকে পাকিস্তান বলেছে, পানি স্থগিত নিয়ে যে কোনো পদক্ষেপ যুদ্ধের সামিল। শুধু তাই নয় ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে নয়াদিল্লির সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্য স্থগিত করেছে পাকিস্তান এবং আকাশসীমাও বন্ধ করে দিয়েছে।

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশ দুটি কাশ্মীর ইস্যুতে দুই থেকে তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। তারা কাশ্মীরে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের দাবি করে আসছে।

চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু নদীর পাশাপাশি অভিন্ন আরও কিছু নদীর পানি সরবরাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যে পানির ওপর পাকিস্তানের কৃষিখাত ৮০ শতাংশ নির্ভরশীল। পূর্বে ভারত-পাকিস্তান একাধিকবার যুদ্ধ জড়ালেও এই চুক্তির ওপর কখনও প্রভাব পড়েনি।

মালিক বলেন, কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চতুর্থ পদক্ষেপ হিসেবে বিষয়টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উল্লেখ করা হবে। তিনি বলেন, একাধিক প্রক্রিয়া আমরা তৈরি করে রেখেছি এবং কার্যকর সব ফোরামে আমরা এটি পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছি।

পাকিস্তানের এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করা এবং এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলিয়ে রাখা যায় না। চুক্তির মধ্যে এ ধরনের কোনো ধারা নেই।’

বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের সাবেক প্রধান কুশভিন্দর ভোরা বলেন, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত রাখার ফলে পাকিস্তানের পাল্টা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধা খুবই কম। তবে আমি বলতে পারি, এ বিষয়ে ভারতের শক্ত অবস্থান আছে।

উভয় পক্ষের সরকারী কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভারত দ্রুতই পানির প্রবাহ বন্ধ করতে পারবে না, কারণ চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত তিনটি নদীতে ভারত শুধুমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারে- তাও উল্লেখযোগ্য পানি সংরক্ষণ বা বাঁধ ছাড়াই। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হতে পারে এবং ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানির সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সিন্ধু চুক্তি স্থগিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!