খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, করোনায় দুই
  ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত বে‌ড়ে ৭

ভারতের নিষেধাজ্ঞা : বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে হতাশা

বেনাপোল প্রতিনিধি

ভারত সীমান্তের যেকোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাট, বোনা কাপড় ও সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে প্রতিবেশি দেশ ভারত। তবে বেনাপোল স্থল বন্দরে কোন পাট বা পাটজাতীয় ট্রাক আটকা নেই বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে।

শুক্রবার (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি হবে না। এর মধ্যে রয়েছে পাটজাত পণ্য, একাধিক ভাঁজের বোনা কাপড়, একক শণ সুতা বা তন্তু, পাটের একক সুতা, ব্লিচ না করা পাটের বোনা কাপড়। এই পণ্যগুলো স্থলপথ থেকে আমদানি করা না গেলেও। ভারত সরকার শুধু মুম্বাইয়ের নহাভা শেভা বন্দর দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।

দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য নেপাল ও ভুটানে যাবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। কিন্তু এসব পণ্য পুনরায় রপ্তানি করা যাবে না।

এভাবে একের পর এক পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যের জোগান কমতে শুরু করেছে। এতে হতাশায় ভুগছেন বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে একের পর এক নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব অজয় ভাদু স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত দ্রব্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

তিনি আরও বলেন, ভারতের অনেক ছোট ছোট আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে পার্ট ও পাটজাত দ্রব্য আমদানি করতো। এসব ছোট আমদানিকারকরা সমুদ্রপথে এ পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন।

বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন অনেক পাট ও পাটজাত দ্রব্য ভারতে রপ্তানি হয়। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হঠাৎ করে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় অনেক ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়বে। রপ্তানি বন্ধের খবরটি আগেই জেনে অনেক রপ্তানিকারক বেনাপোল বন্দরে কোন ট্রাক পাঠায়নি। ফলে এসব পণ্যের কোন ট্রাক বন্দরে আটকা নেই।

বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী এবং কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশ। ভারত সামগ্রিকভাবে বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী হলেও, রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রাধান্য বিস্তার করে, যা বিশ্বব্যাপী রপ্তানির এক উল্লেখযোগ্য অংশ।

এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে তিন মাসে তিন দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করল ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দিয়েছিল। গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করেছিল দেশটি।বাংলাদেশ ভারতে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। স্থলবন্দর দিয়ে এই পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এই খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!