খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  নগরীর জিরোপয়েন্টে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
  নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২২ জুন পর্যন্ত

ভারতের দাপটে চেন্নাইতে শান্তদের হতাশার দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চেন্নাই টেস্টে আরেকটি হতাশার দিন পার করল বাংলাদেশ। শুরুর দিনের মতো বোলিংটা দারুণ হলেও ব্যাটিংয়ে রীতিমতো ধস নামে সফরকারীদের। ভারতের বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪৯ রানেই গুঁটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এমনকি এড়াতে পারেনি ফলোঅনও।

দিনের তৃতীয় সেশনে লিড নিয়ে ব্যাট করতে নেমে পুঁজি আরও শক্ত করে নিয়েছে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তিন উইকেটে ৮১ রানে দিন শেষ করেছে রোহিত শর্মার দল। দিন শেষে উইকেটে ১২ রানে অপরাজিত রিশাভ পন্থ। তার সঙ্গে শুভমান গিল ব্যাট করছিলেন ৩৩ রানে। ৩০৮ রানে এগিয়ে থেকে আগামীকাল শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চেন্নাই টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করবে স্বাগতিকরা।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থেকে ২২৭ রানে এগিয়ে ছিল ভারত। সুযোগ ছিল বাংলাদেশকে ফলোঅনে আবারও ব্যাট করতে পাঠানোর। কিন্তু সেটা না করে লিড আরও বাড়িয়ে নিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। নিজেদের পুঁজি শক্ত করতে নেমে শুরুতে জোড়া ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই রোহিত শর্মাকে ৫ রানে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। এরপর জয়সওয়ালকে ১০ রানে নিজের শিকার বানান নাহিদ রানা। ২৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কোহলি ও গিলের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে ভারত। দিনের শেষ দিকে মিরাজের বলে ১৭ রানে এলবিডব্লিউ হলে বাকি সময় উইকেটে কাটিয়ে দেন গিল ও পন্থ।

আজ বল হাতে দিনের শুরুটা পরিকল্পনা মতোই করেন হাসান মাহমুদরা। ভারতকে গুঁড়িয়ে দেন ৪০০’র নিচে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার চরম নজির দেখালেন সাদমান-মুমিনুলরা। প্রতিরোধ তো দূরে, একের পর এক ব্যাটারদের আশা-যাওয়ার মিছিলে ফলোঅনও এড়াতে পারেননি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪৭.১ ওভার স্থায়ী হয় বাংলাদেশের ইনিংস।

এর আগে স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করে ভারত। গত দিনের মতো অশ্বিন আর জাদেজাকে ছুটতে দেননি বাংলাদেশের পেসাররা। দিনের শুরুতেই জাদেজাকে নিজের শিকার বানান তাসকিন আহমেদ। আগের দিন ৮৬ রানে শেষ করা জাদেজা আজ আর রান তুলতে পারেননি।

পরের ব্যাটার আকাশ দ্বীপকেও থামান তাসকিন। ৩০ বলে ১৭ রানে বেশি যোগ করতে পারেননি আকাশ। এরপর থামান অশ্বিনকে। আগের দিন ১০২ রানে অপরাজিত থাকা অশ্বিন আজ ১১ রান যোগ করেই ফেরেন সাজঘরে। তাসকিনের করা স্ট্যাম্পের বাইরের বল সজোরে মারেন অশ্বিন। লক্ষ্য ছিল বাউন্ডারি। তবে, সেটি হতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। লুফে নেন ক্যাচ। ১৩৩ বলে ১১‌৩ রানে থামে তার ইনিংস।

ভারতের শেষ ব্যাটার হিসেবে নামা বুমরাহকে বিদায় করে ব্যাক টু ব্যাক ফাইফারে নাম লেখান হাসান মাহমুদ। ভারতের মাটিতে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ উইকেট পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন হাসান। তাসকিন ও হাসানের দাপটে শেষ পর্যন্ত ৩৭৪ রানে থামে ভারত।

বোলিংয়ের এমন দারুণ উচ্ছ্বাস ব্যাটিংয়ে নামতে নামতেই আবারও মিলিয়ে গেল। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের সামনে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। দলীয় ৪০ রানেই পাঁচ টপঅর্ডার বিদায় নেন।

প্রথমটা ধসটা শুরু সাদমান ইসলামকে দিয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই জাসপ্রীত বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকা বল না খেলে ছেড়ে দেন সাদমান। সেই বল অফ স্টাম্পের বেল উড়িয়ে দেয়। এরপর ২২ রানে আকাশের বলে বোল্ড জাকির হাসান (৩)। চারে নামা মুমিনুল তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তিনি পড়েন আকাশ দ্বীপের ফাঁদে।

দলের বিপর্যয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আজও চরম ব্যর্থ। হাল ধরা তো দূরে উল্টা সিরাজের বলে খোঁচা মেরে কোহলির হাতে ক্যাচ উপহার দেন শান্ত। ৩০ বল টিকে ২০ রানে থামে তার ইনিংস।

মিডল অর্ডারে নেমে মুশফিকুর রহিমও পারেননি হাল ধরতে। এমন বিপর্যয়ে কিছুটা আশা দেখান সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। দুজনের ব্যাটে মনে হয়েছিল লড়াইয়ে ফিরতে পারে বাংলাদেশ। কিন্তু না, ভক্তদের ভুল প্রমাণ করে অহেতুক শট খেলে সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস।

জাদেজার অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি সুইপ করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক আজ ফিরলেন মাত্র ২২ রানে।

একই বোলারের ফাঁদে পা দিলেন সাকিবও। জাদেজার স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন সাকিব। বল তার ব্যাটে লেগে জুতায় পড়ে উপরে উঠে যায়, এই সুযোগটা লুফে নিয়ে ক্যাচ নেন পন্থ। ৬৪ বলেই থেমে যায় ৩২ রান করা সাকিবের ইনিংস।

একের পর এক বিদায়ে ক্রিজে শেষ আশা হয়ে ওঠেন মিরাজ। একদিকে ফলোঅনের শঙ্কা, অন্যদিকে সঙ্গ দেওয়ার কেউ নেই। একা মিরাজ কতটুকুই বা পারতেন টানতে? মিরাজ টেলএন্ডারদের নিয়ে চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগ সঙ্গীর অভাবে তিনিও পারলেন না ফলোয়ানের বাধা কাটাতে। উইকেটে সবাই আউট হওয়ার পর শেষ ব্যাটার হিসেবে ২২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!