বিশিষ্ট শিল্পপতি, ভারতের টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা মারা গেছেন। বুধবার রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রতন টাটাকে কয়েক দিন আগে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী প্রথমন ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে জানান, হাসপাতালে রুটিন চেকআপের জন্যই গিয়েছিলেন রতন টাটা। তবে ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। সংকটজনক অবস্থায় পরে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
যদিও এ বিষয়ে প্রথমে মুখ খোলেনি টাটা গ্রুপ। রতন টাটার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার বিবৃতি দেবে বলে জানিয়েছিল। তবে গতকাল রাতেই রতন টাটা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিশিষ্টজন।
রতন টাটার জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে পারসিক পরিবারে। কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে স্থাপত্যে স্নাতকোত্তর রতন টাটা সত্তরের দশকে টাটা গ্রুপের ম্যানেজারের দায়িত্ব পান। ১৯৯১ সালে তিনি টাটা গ্রুপের কর্ণধার হন। প্রথমে পরিবারিকভাবে কিছুটা আপত্তি উঠলেও দ্রুতই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। তাঁর ২১ বছরে টাটা গ্রুপের আয় হয় ৪০ গুণ; মুনাফার হিসাবে তা ৫০ গুণ। ২০১৭ সালে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। এর পর সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত ছিলেন।
রতন টাটার সবচেয়ে বেশি পরিচিত গাড়ি সহজলভ্য করার জন্য। তিনিই প্রথম উপমহাদেশের মধ্যবিত্তকে চার চাকার স্বপ্ন দেখান। পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা তাঁর হাতেই শুরু। তিনি শিল্প শুধু মুনাফা অর্জনের জন্য নয়; মানবসেবার জন্যও– এই নীতিতে প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন। সারাজীবনের আয়ের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ জনকল্যাণে দান করে গেছেন তিনি।
রতন টাটা ২০০০ সালে ভারতের ‘পদ্মভূষণ’ এবং ২০০৮ সালে ‘পদ্মবিভূষণ সম্মান’ পান। এ ছাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্র, বিশ্ববিদ্যালয়, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসও তাঁকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেন। রতন টাটা বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হননি।
খুলনা গেজেট/এইচ