অভাবের সংসার। সকালে ভাত জোটেনি ১১ বছরের শিশুকন্যা হালিমা খাতুনের। দুপুরে প্লেটে ভাত কম দেয় তার মা। ভাত কম দেখে রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় সে। পরে সন্ধ্যায় ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে হালিমা। পুলিশ এসে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ যশোর মর্গে প্রেরণ করেছে অভয়নগর থানা পুলিশ।
মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় যশোরের অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুরের পুড়াখালী গ্রামে। হালিমা গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জলিল বিশ্বাস ও রাইস মিলের শ্রমিক রেশমা বেগমের একমাত্র মেয়ে।
আব্দুল জলিল বলেন, হালিমা আমাদের একমাত্র মেয়ে। ঘটনার দিন সকালে বাড়িতে খাবার না থাকায় ১০ টাকা দিয়ে কিছু খেয়ে নিতে বলে আমি কাজে চলে যায়। বিকেলে ফিরে দেখি মেয়ে আমার ঘরের ভেতরে আছে। সন্ধ্যায় ওর মা মিল থেকে ফিরে এসে দেখে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মেয়ে ঝুলে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
হালিমার মা রেশমা বলেন, রাইস মিল থেকে দুপুরে বাড়ি ফিরে ভাত রেধে হালিমা ও তার ছোটভাইকে খেতে ডাকি। ছোট ছেলের প্লেটে ভাত একটু বেশি আর তার প্লেটে ভাত কম দেওয়ায় মেয়ে আমার রাগ করে না খেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যায় মিল থেকে ফিরে মেয়ের লাশ দেখতে পাই। আমার কারণে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শ্রীধরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলী মোল্যা জানান, দরিদ্র পরিবার। একটি ভাঙা কুঁড়ে ঘরে বসবাস তাদের। প্লেটে ভাত কম দেওয়ায় শিশু হালিমা তার মায়ের উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান মুঠোফোনে শিশু হালিমার আত্মহত্যার কথা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর আজ দুপুরে পাথালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমে যশোর হাসপাতালে মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
খুলনো গেজেট/এএ