যশোরে শাহানারা বেগম সানা (৫০) নামে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি শহরতলীর শেখহাটি আর্দশপাড়ার ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমানের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে নিজ বাড়িতে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার খালাতো ভাই সুমন পলাতক রয়েছে। হত্যাকান্ডে তারা জড়িত থাকতে পারে বলে নিহতের ছেলে সোহেল সন্দেহ করছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, শেখহাটি আর্দশপাড়ার ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমান তার স্ত্রী সানা বেগমকে বুধবার সকাল ১০টায় যশোর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে যান। এরপর দুপুর ২ টার দিকে তিনি ইজিবাইক চালানোর জন্য বাইরে চলে যান। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বাড়ি ফিরে মূল ফটকে এবং বসতঘরের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলানো দেখতে পান। এসময় আতিয়ার তার ছেলে ইউসুফকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেন। তিনি নিখোঁজের বিষয়টি কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর আজ বৃহস্পিতবার সকাল ৮টার দিকে স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ এবং সোহেল বাড়ির দেয়াল বেয়ে টিনের চালার উপর দিয়ে বাড়ির ভেতরে ছাগলকে খাবার দেয়ার জন্য প্রবেশ করেন। এসময় তারা ঘরের দরজার সাথে রক্ত মাখা কাপড়ের টুকরা দেখে তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন। এরপর তারা শাহানারা বেগমের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে দুর্বৃত্তরা বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বলে তারা ধারণা করেছেন।
হত্যার খবর কোতোয়ালি থানাকে জানালে পুলিশ দুপুর ১২ টার দিকে মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শাহানারা বেগমের স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ ও সোহেল জানিয়েছেন, তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া তালবাড়ীয়া গ্রামের বাবলা (৩০) ও তার খালাতো ভাই সুমন (২৫) এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকতে পারে। তারা তার মাকে হত্যা করে বাড়ির সকল দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় শাহানারা বেগমের শরীরে থাকা স্বর্ণের দুল, চেইন, আংটি ও চুড়ি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে বলেও জানান তারা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা এসআই আল আমিন জানিয়েছেন, শাহানারা বেগমের বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত ও মাথায় আঘাত করে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।
স্বামী আতিয়ার রহমান আরো বলেন, তালবাড়ীয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে বাবলা (৩০) গত তিন মাস যাবৎ সস্ত্রীক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন শাহানারা বেগমের বাড়িতে। সেই সুবাদে বাবলার বাসায় তার খালাতো ভাই সুমন মাঝে মধ্যে যাতায়াত করত। ওই বাবলা মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন চুরির সাথে সম্পৃক্ত। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাহানারা বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন বাবলাকে বাসা ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেন। বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর ভাড়াটিয়া বাবলা তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যাবার সাথে সাথে তার স্ত্রীকেও তারা হত্যা করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শাহানারা হত্যাকান্ডে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া জড়িত বলে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করেছেন। এ কারণে তাদের আটকে পুলিশি অভিযান চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম