দেশে আইনের শাসন দূরে থাক, আইন-কানুনের শেষ চিহ্নটুকুও এখন বিলীন হয়ে গেছে। দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র এখন সম্পূর্ণরূপে মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে। সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা কেবল বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরাই মারা যাচ্ছে না, ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা নিজেরাই একে অন্যকে হত্যা করছে।
রোববার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, বগুড়া জেলার আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অমর একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষে স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে ফিরে আসার সময় আওয়ামী দুর্বৃত্তরা ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এতে বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এই হামলা প্রমাণ করে রাষ্ট্রক্ষমতা যারা পরিচালনা করছেন তারা সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। জেলায় জেলায় তারা রাজনৈতিক দল গঠন করেননি, বরং সন্ত্রাসীদের দিয়ে গ্যাং তৈরি করে বিরোধী দলের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করছেন।
মহান দিবসে বগুড়া বিএনপির প্রভাত ফেরীতে আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা একমাত্র মাফিয়া রাষ্ট্রেই সম্ভব। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল অবিলম্বে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক বোরহান উদ্দীন মুজাক্কিরকে গুলিবর্ষণ করে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী ভোটারবিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপরই নির্যাতন নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে দুর্নীতি, লুটপাট ও দখলে তাদের পাপের বোঝা এখন এত বেশি হয়ে গেছে যে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। গত শুক্রবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সংঘটিত আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতার সমর্থকদের মধ্যে নারকীয় সংঘর্ষ সেটিরই পৈশাচিক বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সত্য সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়ে সাংবাদিকদেরও জীবন-প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিংবা তাদেরকে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে। দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক বোরহান উদ্দীন মুজাক্কির সেই নির্মমতার শিকার হয়ে তার প্রাণ কেড়ে নেওয়া হলো। এখন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা এতই সহিংস বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা গোটা দেশটাকেই নিজেদের সম্পত্তি ভাবছে। সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে নিশ্চিতভাবে বলা যায়- রক্তের হোলি খেলাই যেন তাদের একমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। দেশে-বিদেশে তাদের সীমাহীন কুকীর্তি ফাঁস হওয়ার পরেও তাদের টনক নড়েনি। বরং নিজেরা খুন-খারাবিতে লিপ্ত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম