সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বসতবাড়ির জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আপন বড় ভাই ও ভাইপোদের মারপিটে মো. আব্দুল কাদের মোড়ল (৬৫) নামে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৩ মার্চ) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাখিমারা খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ আব্দুল কাদের মোড়ল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামের মৃত খতিব আলী মোড়লের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বসতভিটা নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ কাদের মোড়ল ও তার বড় ভাই মোশারফ মোড়লসহ কয়েকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কাদের মোড়লকে তার তিন বড় ভাই ও ভাইপোরা ঘাড়ে, পেট ও বুকে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। এতে তিনি জ্ঞান হারান। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী মাকসুদা বিবি বলেন, আমার ভাসুরদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আমার সামনে প্রকাশ্যে আমার ভাসুররা ও ভাসুরের ছেলেরা আমার স্বামীকে ঘাড় মটকিয়ে মারধর করে।
কাদের মোড়লের ছেলে তৈবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার চাচা মফিজুল মোড়লের কাছ থেকে আমরা একটি জমি কিনি। সেই জমিতে বালি ভরাটকে কেন্দ্র করে অন্য চাচাদের সাথে আমাদের বিরোধ বাধে। রোববার ভোরে এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাড়ে ৫টার দিকে চাচা মোশারফ মোড়ল, চাচা অহেদ মোড়ল, চাচা রফিকুল মোড়ল এবং চাচাতো ভাই রবিউল ইসলাম ও হাবিবুর রহমানসহ তাঁদের সহযোগীরা আমার প্রতিবন্ধী বাবাকে ব্যাপক মারপিট করে। গুরুতর আহত অবস্থায় বাবাকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এদিকে, এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা বলেন, ঘটনাটি জানার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ