খুনি দূরের কেউ নয়,আপন ভাগ্নি জামাইয়ের হাতেই খুন হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের জেকি আক্তার আর তার দুই সন্তান। জেকিকে হত্যার পর দেখে ফেলায় একে একে তার দুই সন্তানকে হত্যা করে ভাগ্নি জামাই নরসিংদীর মাধবদীর আলগী গ্রামের জহিরুল ইসলাম। এরপর বাইরে থেকে গেইট তালা দিয়ে পালিয়ে যায় সে। পুলিশ জহিরুলকে গতকালই আটক করেছে।
তবে এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। এদিকে নিহত জেকি আক্তারের পিতা হাজী আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওইদিন সকালে বাঞ্ছারামপুরের আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলমের বসতঘর থেকে তার স্ত্রী জেকি আক্তার (৩৫), তার বড় ছেলে মাহিন (১৬) ও ছোট ছেলে মহিন (৭) এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং খুনিদের আটক করতে কাজ শুরু করে পুলিশের একাধিক টিম।
পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, জেকি আক্তারের বড় বোন শিল্পী আক্তারের মেয়ে ১৯/২০ বছর বয়সী আনিকা আক্তারের মেয়ের জামাই জহিরুল ইসলাম।
আনিকার সঙ্গে তার বনিবনা ছিলো না। এ নিয়ে শ্বশুর বাড়ির সাথে কলহ চলছিলো জহিরুলের। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে সোমবার খালা শ্বাশুরী জেকি আক্তারের বাড়িতে আসে জহিরুল। তার আসার বিষয়টি জেকি তার বোন শিল্পীকে ফোন করে জানালে তাকে জায়গা না দিতে বলেন শিল্পী।
এরপর জেকি জহিরুলকে চলে যেতে বললে সে ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে জেকির পরিবার নিয়ে আপত্তিকর কথা বললে জেকি দা নিয়ে এগিয়ে আসে জহিরুলের দিকে।
এই দা দিয়ে কোপ দিয়েই জেকিকে প্রথমে হত্যা করে জহিরুল। এসময় জেকির বড় ছেলে মাহিন এগিয়ে এলে তাকে এবং তার ছোট ভাই মহিনকে হত্যা করে।
মূলত জহিরুল তার পরিচয় আড়াল করতে জেকিকে হত্যা পরবর্তীতে তার দুই সন্তানকে হত্যা করে।
তবে জেকির কন্যা সন্তান অজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় বিছানার ওপর।
ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে কাজের মহিলা এসে দেখেন শাহআলমের দালান ঘরের গেইট লাগানো। অনেক ডাকাডাকির পর সারা না পেয়ে বাড়ির অন্যান্য লোকজনকে নিয়ে গেইট খুলে সবাই ভেতরে ঢুকেন। ঘরের মেঝেতে ও বাথরুমে শাহ আলমের স্ত্রী ও দুই সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। আর শিশু সন্তান বিছানায় অক্ষত অবস্থায় পড়েছিলো।
তথ্য পেয়ে মঙ্গলবারই পুলিশ জহিরুলকে নরসিংদীর মাধবদীর আলগী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। পুলিশ সূত্র জানায়-স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর জন্যে জহিরুলকে আজ আদালতে পাঠানো হবে। এরপরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ নিয়ে প্রেসব্রিফিং করবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম