বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বৃহস্পতিবার রাতে লা কাসাব্লাঙ্কায় ব্রাজিলকে রুখে দিয়েছে ইকুয়েডর। ৩২ ফাউলের ম্যাচটি ১-১ গোল সমতায় শেষ হয়। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্যাসেমিরো।
ঘরের মাঠে সমতায় ফিরতে বেশ বেগ পেতে হয় ইকুয়েডরকে। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে তরেসের গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
ব্রাজিল ও ইকুয়েডরের ম্যাচটি যেন ছিল মার্শাল আট। ম্যাচের প্রথমার্ধেই তিনবার লাল কার্ড উচিয়ে ধরেন ম্যাচ রেফারি। যদিও ভিআর চেকে একটি যায় বাতিলের খাতায়।
পুরো ম্যাচে ফাউলের সংখ্যা ছিল ৩২টি। বল দখলে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল গোলের জন্য শট নেয় ১২টি, যার ৬টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ইকুয়েডরের ১০টি শটের একটি ছিল লক্ষ্যে।
লা কাসাব্লাঙ্কায় ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিলের রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে ইকুয়েডর। তবে এরপরই আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করে ব্রাজিল। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রতি আক্রমণে গিয়ে গোলের দেখা পায় ক্যাসেমিরোরা। কর্নার থেকে ভিনিসিউসের বাড়ানো শট ইকুয়েডরের রক্ষণভাগের ব্যর্থতায় বল চলে যায় ডি বক্সে থাকা ক্যাসেমিরোর কাছে। গোলরক্ষক প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তবে ইকুয়েডর বড় ধাক্কাটি খায় ম্যাচের ১৩তম মিনিটে। মাথেউস কুনহাকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দলটির গোলরক্ষক ডমিনগেজ।
এর পর ব্রাজিলের এমারসন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে দুই দলের মধ্যে ভারসম্য ফিরে আসে।
তবে তখনো শেষ হয়নি ম্যাচের নাটক। বল সেভ করতে গিয়ে অ্যালিসন ফাউল করে বসেন। সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখান ম্যাচ রেফারি। যদিও ভিআর চেকে দেখা যায়, তিনি ইচ্ছা করে ফাউলটি করেননি। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়।
ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে কৌতিনিয়োকে তুলে দানি আলভেসকে নামান কোচ তিতে। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় ব্রাজিলকে।
ম্যাচের ৪৯তম মিনিটে সমতায় ফিরেছিল স্বাগতিকরা। তবে এসত্রাদার জালে জড়ানো বলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে পিছিয়ে যেত পারতো ব্রাজিল। বল নিয়ে ব্রাজিলের ডি বক্সে ঢুকে পড়া এস্তোপিনান ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ভিআর চেকে পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন ম্যাচ রেফারি।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। কর্নার থেকে গনজালো প্লাটার বাড়ানো শট হেডের সাহায্যে জালে জড়ান ফেলিক্স তরেস। অ্যালিসন বাঁ দিকে ঝাপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি।
প্রথমার্ধের মত ফের নাটকীয়তা ঘটে ম্যাচের যোগ করা সময়ে। ডি বক্সে বল সেভ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের গায়ে লাগলে ফাউল ঘোষণা করে রেফারি অ্যালিসনকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান। পরে অবশ্য ভিআর চেকে রক্ষা পায় ব্রাজিল।
১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কনমেবল থেকে সবার শীর্ষে ব্রাজিল। চিলির বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ১৩ ম্যাচে ৮ জয় ও ৫ ড্রয়ে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে আর্জেন্টিনার অবস্থান টেবিলের দুইয়ে। ১৫ ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে ইকুয়েডর।
২০১৫ সালের অক্টোবরে সান্তিয়াগোতে সবশেষ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে হারের মুখ দেখেছিল ব্রাজিল। এরপর সময় গড়িয়ে ব্রাজিলের জয়যাত্রায় ফাটল ধরাতে পারেনি কেউ। বাছাইয়ে ৩০ ম্যাচ অপরাজিত সেলেসাওরা।
চিলির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার জয়
মেসিহীন
চিলির মাঠে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে জেতালেন ডি মারিয়া ও লাউতারো মার্টিনেজ। দলে লিওনেল মেসি নেই। কিন্তু তাতে আর্জেন্টিনার জয় পেয়েছে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতেছে ২-১ গোলে।
করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠলেও পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে পারেননি লিওনেল মেসি। তাই তাকে এবারের বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে না খেলানোর অনুরোধ করেছিল প্যারিস সেন্ত জার্মেই। আর্জেন্টিনা সেই ‘ডাকে’ সাড়া দিয়ে বাইরে রেখেছে তাদের অধিনায়ককে। যদিও দলের সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়াই চিলি জয় করেছে আলবিসেলেস্তেরা।
কালামার ম্যাচে আনহেল দি মারিয়ার গোলে শুরুতে এগিয়ে গেলেও স্বাগতিকরা ম্যাচে ফিরতে সময় নেয়নি। বেন ব্রেরেতন দিয়াসের লক্ষ্যভেদে সমতায় ফেরে চিলি। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগেই ব্যবধান আবার বাড়িয়ে নেয় আর্জেন্টিনা। লাউতারো মার্তিনেসের ওই গোলে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।
এ নিয়ে টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকলো আর্জেন্টিনা। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখলো। ১৪ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট আলবিসেলস্তেদের। এক ম্যাচ বেশি খেলা চিলি ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে।