বগুড়ার গাবতলীতে এজেন্টের কাছ থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বুধবার (৮ মে) সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে। এছাড়া কুসুমকলি কেন্দ্র থেকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।
সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ে অব্যাহতি পাওয়া দুজন হলেন- সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও তারিকুল ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এটিএম আমিনুল ইসলাম।
একই উপজেলায় ভোট কারচুপির জন্য ব্যালট পেপার কেন্দ্রের বাইরে পাঠানোর অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম ও এক প্রার্থীর এজেন্ট সাবেক ইউপি সদস্য এরশাদ আলী আটক হন। আটককৃতদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার।
জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আনারস মার্কার প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক উপজেলার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এসে দ্বিতীয় তলার দুটি ৪ ও ৫ নম্বর বুথে পোলিং এজেন্টের কাছ থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে সিল মারেন।
এ সময় এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার রুমে দরজা বাইর থেকে লাগিয়ে দোতলার পুরুষ দুই ভোট কক্ষে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেন, হয়তো ভুলবশত বাইরে থেকে কেউ দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। আর জাল ভোটের বিষয়টি তিনি জানেন না। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশাসনকে জানালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফসানা রিমা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি আদালত বসালে জাল ভোট হওয়ার কথা স্বীকার করেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে হাফিজুর আর তরিকুলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এটিএম আমিনুল ইসলাম জানান, ভোটগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগে হাফিজুর ও তরিকুল নামে দুই সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে রামেশ্বাপুর ইউনিয়নের কুসুমকলি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম ও আনারস মার্কা প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের এজেন্ট এরশাদ আলীকে আটক করেছে পুলিশ। প্রায় ব্যালটে সিল মারা ৯০০টি জাল ভোটসহ তাদের আটক করা হয়৷ এছাড়াও প্রায় ৩০০টি জাল ভোট বাক্সে ফেলানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
বগুড়ার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান বলেন, যেখানে অভিযোগ আছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোট গ্রহণ চলবে।
খুলনা গেজেট/এমএম