খুলনা, বাংলাদেশ | ২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬৭
  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ২
  ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু

ব্যাংক সংস্কারে কমিশন নয়, গঠন হবে টাস্কফোর্স

গেজেট ডেস্ক

অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, ঋণ কেলেঙ্কারিসহ গত কয়েক বছরে সুশাসনের অভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় দেশের ব্যাংক খাত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে ও আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করতে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু করুণ দশা থেকে দেশের ব্যাংক খাতকে দাঁড় করাতে কমিশন নয়, শক্তিশালী ব্যাংকিং টাস্কফোর্স করতে যাচ্ছে সরকার। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এই টাস্কফোর্স গঠন করে সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। যাদের কাজ হবে ব্যাংকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

সূত্র বলছে, টাস্কফোর্সের দায়িত্ব হবে ব্যাংকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ। এই টাস্কফোর্সের রিপোর্টের সংখ্যা হতে পারে ১০-এর অধিক। তারা যেসব সমস্যা চিহ্নিত করবে, সেগুলো সমাধানের পরামর্শও দেবে। এরপর ওই পরামর্শ কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তাও মনিটর করা হবে। পাশাপাশি যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে নতুন পরিকল্পনাও প্রণয়নের দায়িত্ব থাকবে তাদের। এ ক্ষেত্রে তারা আইন পরিবর্তনসহ অন্যান্য সুপারিশও রাখতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাংকিং বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন বা ব্যাংকিং বিষয়ে ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কাউকে এই টাস্কফোর্সের প্রধান করা হতে পারে। পাশাপাশি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারের সাবেক আমলা ও সাবেক একাধিক ব্যাংকারকে দেখা যাবে এই টাস্কফোর্সে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, আমরা একটি ব্যাংকিং কমিশন করার জন্য কাজ করছি। তবে এটার নাম ব্যাংকিং কমিশন বা টাস্কফোর্স হবে কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তাদের অনেক দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং কমিশন কয়েকটা সুপারিশ দেবে আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে—বিষয়টি এমন কিছু নয়। বর্তমানে ব্যাংক খাতের অবস্থা ভালো নয়। এজন্য আমরা যাদের দায়িত্ব দেব, তারা আর্কিটেক্ট হিসেবে কাজ করলে হবে না, রাজমিস্ত্রির মতো ব্যাংকগুলোকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের কাজ করতে হবে।

টাস্কফোর্স বা ব্যাংকিং কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে কাজ করে তা জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংক কমিশনের সাধারণ কাজ হয় তিন ধরনের। সরকারকে তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাংকের কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দেন। কোন কোন ক্ষেত্রে মাঝারি ধরনেরও হতে পারে। তারা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাংকের বিভিন্ন সমস্যা নির্ণয় করে এর সমাধান কী হতে পারে তার বিষয়ে পরামর্শ দেন। কিন্তু যদি কমিশন দীর্ঘমেয়াদি হয়, তখন সমস্যা নির্ধারণ ও সমাধান দেবে। পাশাপাশি তা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তার রক্ষণাবেক্ষণও করবে। এক্ষেত্রে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে গিয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করবে কমিশন। এখন সরকার কী চিন্তা করছে, তা কমিশন গঠনের পর বোঝা যাবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, এটা সম্ভবত ব্যাংকিং টাস্কফোর্সের মতো হতে পারে। তারা হয়তো ব্যাংকের বর্তমান কী অবস্থা তা একটি রিপোর্টের মাধ্যমে না বলে টাইম টু টাইম বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করবে। তারা সুপারিশ দেওয়ার পরই তা বাস্তবায়ন শুরু হয়ে যাবে। শেষ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করবে না। কমিশন হলে তো শেষে একটা রিপোর্ট দেবে, সে অনুযায়ী সরকার চাইলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; কিন্তু এখানে ধাপে ধাপে সুপারিশ দেবে এবং সঙ্গে সঙ্গে তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা হয়তো ৬ মাস বা এক বছরের মধ্যে ৮-১০টি রিপোর্ট দেবে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী কতটুকু কাজ হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করবে। একই সঙ্গে কোনো সমস্যা হলে তা ফের গবেষণা করে নতুন পরামর্শও দেওয়া হতে পারে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!