চলতি সপ্তাহে ব্যাংক থেকে একজন গ্রাহক দৈনিক সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা তুলতে পারবেন। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের এমডিকে এসএমএসের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার একজনের সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা তোলার সুযোগ ছিল। অবশ্য কোনো ব্যবসায়ী বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বেশি টাকা উত্তোলন করতে চাইলে পারবে। আবার প্রবাসীর বড় অংকের টাকা আসলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাও তুলতে কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, একই ব্যক্তি একাধিক শাখা থেকে আলাদা-আলাদাভাবে যেন বেশি টাকা তুলতে না পারে তা দেখতে হবে। বিশেষ করে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। অবশ্য কোনো ব্যবসায়ী যদি যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে বাড়তি টাকা তুলতে চান তাতে কোনো বাধা নেই। তবে এ ক্ষেত্রে ওই ব্যবসায়ীকে নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ বেশিরভাগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রাস্তায় নেই পুলিশের টহল। এ রকম অবস্থায় ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে বের হলে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। আবার ব্যাংকগুলোও এক শাখা থেকে আরেক শাখায় সহজে টাকা দিতে পারছে না। অনেক এটিএম বুথেও পর্যাপ্ত টাকা মিলছে না। এরই মধ্যে শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন। প্রধান বিচারপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই পদ ছেড়েছেন। আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতার খোঁজ মিলছে না। এ অবস্থায় একদিকে নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বড় অংকের টাকা তুলে যেন কেউ নাশকতার সুযোগ না পায় তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। যে কারণে উত্তোলনের সীমা বেঁধে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তি যে কোনো পরিমাণের টাকা তুললেই তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীণ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। রাজনৈতিক নেতা, ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী, সচিব, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন এ তালিকায়। এই নির্দেশনা দেওয়া হয় মূলত পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেউ টাকা তুলে যেন অপরাধমূলক কাজ কিংবা পালাতে না পারে সে জন্য।
খুলনা গেজেট/কেডি