খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন, প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দাকৃত বাজেট থেকে তেল খরচও করেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানের গাড়ি নিয়ে বাড়ি গোপালগঞ্জে যান। এছাড়াও ব্যক্তিগত কাজে খুলনা, যশোর, বরগুনা, ঢাকা সহ এ পর্যন্ত ১৪ হাজার কিঃমিঃ ‘র উপরে প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে তেল খরচ করেছেন। এমন অভিযোগ করেছেন তার উপর নাখোশকৃত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। এ ধরনের অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে
তাকে অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর সৈয়দ কামাল উদ্দিন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে কাজী বরকতুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি সম্পদ নষ্ট করেই চলছে। দীর্ঘ ২৩ মাস যাবৎ পিডি ও সম্মানী প্রধান না করে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন। এছাড়াও প্রশিক্ষণ গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে খুলনা যশোর, গোপালগঞ্জ, বরগুনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১৪ হাজার কিঃ মিঃ এর উপরে প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে তেল খরচ করেন, যার ফলে কাঙ্ক্ষিত প্রশিক্ষণ ব্যাহত হয়েছে। প্রশিক্ষণের কাঁচামালের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের গালিগালাজ করে হুমকি ধামকি প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানের ড্রাইভার মোঃ আমিনুর সরদারকে ১১ নভেম্বর অধ্যক্ষের রুমে ডেকে নিয়ে শার্টের কলার চেপে মারধর করেন, যা প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অবগত। অনুমোদিতভাবে গভীর রাতে প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালসহ স্থানীয় পত্রিকায় প্রচার হয়।
সৈয়দ কামাল উদ্দিন লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষের এ সকল অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক সন্ত্রাসী মূলক আচার-আচরণ, প্রশিক্ষক ও কর্মচারীদের উচ্চস্বরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, হুমকি-ধামকী, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট কারণ দর্শানোর মহোৎসব ও বদলীর ভয় দেখানো এবং বদলি করা সহ নানারকম মানসিক অত্যাচার অব্যাহত রেখেছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড সমূহ সুষ্ঠুভাবে পালিত হচ্ছে না। ফলে যে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সরকার খুলনা টিটিসি এর আধুনিকায়ন ও প্রশিক্ষণ মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে, তা বিঘ্নিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমানের সকল অপকর্মের প্রতিবাদে ৭ ডিসেম্বর হতে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবীতে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ ইন্সট্রাক্টর সৈয়দ কামাল উদ্দিন মহা পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদনে খুলনা টিটিসি’র মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের বিগত দিনের সকল অর্জন ও সুনাম ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন।
মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত আবেদনের সংযুক্ত কপিতে প্রতিষ্ঠানের ৪৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারী স্বাক্ষর করেন।
এদিকে রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ও দিনভর অধ্যক্ষের অসদাচার এবং তার ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে নাখোশকৃত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং প্রশিক্ষনার্থী অধ্যক্ষের দ্রুত অপসারণের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।