খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের মূল বিতর্ক পর্ব শুরু, যোগ দিয়েছেন ড.মুহাম্মদ ইউনূস; স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব
  গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ করল সরকার
  বুধবার থেকে সব গার্মেন্টস খোলা, মেনে নেয়া হবে সব দাবি: শ্রম উপদেষ্টা

বৈষম্য দূরীকরণে খুলনায় শিক্ষকদের মানবন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্য দূরীকরণে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টাকে ৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা জানান, পতিত সরকার পরিকল্পিতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছে। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী দেশ গড়ার যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছে তাতে আমরাও নতুন করে স্বপ্ন দেখছি। আপনার (শিক্ষা উপদেষ্টা) গতিশীল নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষা আবার জেগে উঠবে। আপনার এ স্বপ্নযাত্রায় আমরাও আপনার সহযাত্রী হতে প্রস্তুত।

শিক্ষকদের ৪ দফা প্রস্তাবনা

১। মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও মাদরাসা)। এই প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরী। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই বই পড়ানো, একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা অথচ সরকারি ও বেসরকারি নাম দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক
মর্যাদার মধ্যে বিরাট বৈষম্য তৈরী করে রাখা হয়েছে যা শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। শিক্ষার সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।

২। শিক্ষা বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক । শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ। তাদের সকল প্রশিক্ষণ পেডাগোজি কেন্দ্রিক। ক্লাস রুমের পঠন-পাঠনে তারা দক্ষ। অন্যদিকে শিক্ষা প্রশাসনে দীর্ঘ ৩১ বছরে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের সকল প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের, কাজের ধরন ভিন্ন, চর্চা বা অনুশীলন ভিন্ন। শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপপরিচালক পদে তাঁদের পদায়ন করা হলে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্যতা যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি ক্লাস রুম শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ একজন শিক্ষককে উল্লেখিত পদসমূহে পদায়ন করা হলে বিভিন্ন বিধি বিধান সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান না থাকার কারণে অফিসের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নিম্নপদের লোকজনের পরামর্শ দ্বারাই পরিচালিত হতে হয়। প্রশাসনিক দৃঢ় সিদ্ধান্ত তাঁরা গ্রহণ করতে পারেনা। এছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকগণকে পদায়ন করা হলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণকে কাজ করতে হবে। এতে শিক্ষাঙ্গনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছর শিক্ষা প্রশাসনে কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেড অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবী করছি।

৩। শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ১০-২২ বছরের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত SESIP কর্মসূচির ১১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

৪। নানা মাত্রিক সমস্যায় মাধ্যমিক শিক্ষা জর্জরিত। স্কুল, মাদরাসা, সরকারি, বেসরকারি এ রকম নানা রকম প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

মাধ্যমিক শিক্ষা পরিবার, খুলনা মহানগরেরর পক্ষে স্বাক্ষর করেন শেখ মো. রফিকুল ইসলাম, মো. বাদশা খান, শেখ জাহিদুজ্জামান ও মো. দাউদ অর রশিদ শাওন।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!