বৈষম্যমূলক সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। রবিবার (২৪ মার্চ) খুুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজ ও মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ১৩ মার্চ জারিকৃত প্রজ্ঞাপন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি যেমন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের স্বার্থের পরিপন্থী ঠিক অনুরূপভাবে অধিকারের মানদণ্ড বিবেচনায় সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এমন একটি অনাকাক্সিক্ষত পক্ষপাতমূলক প্রজ্ঞাপন জারির ফলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যে চেতনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসিত দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, এই প্রজ্ঞাপন সেই চেতনাকে অবজ্ঞা ও অবমাননা করার শামিল। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দ দেশ গঠন ও জাতির মেধা বিকাশের অনন্য রূপকার। সম্প্রতি জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের মানসিক ও আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং শিক্ষকদের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদাহানিকর এমন পদক্ষেপ মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত করবে, যা সার্বিকভাবে উচ্চশিক্ষার অবনমন ঘটাবে বলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আশঙ্কা করে। এই অনভিপ্রেত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল, ২০১৫ এর ১ জুলাই হতে পিএইচডি ইনক্রিমেন্ট প্রদান সহ অন্যান্য যেসকল ন্যায্য দাবি রয়েছে সেগুলিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার দুরভিসন্ধিমূলক প্রচেষ্টা কিনা সেটাও পর্যালোচনার দাবি রাখে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ বিপুল উৎসাহ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যখন অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছেন ঠিক সেই মুহূর্তে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে শিক্ষকবৃন্দকে আন্দোলনের পথে ঠেলে দিয়ে জাতিকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র কিনা তার যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অর্থ মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত এই প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাখ্যান করছে এবং পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজমান উৎকণ্ঠা ও অসন্তুষ্টি লাঘব করার জন্য অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক, অবান্তর এবং অগ্রহণযোগ্য প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ এএজে