বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কোরবানিকে ঘিরে তেরখাদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ইখড়ি গরু-ছাগলের হাট জমে উঠেছে। বাজারে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশী থাকায় বড় গরু নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ব্যাপারীরা।
শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে থেমে থেমে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে তেরখাদাতে। বইছে দমকা বাতাস। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও এদিন উপজেলার ইখড়ি গরু-ছাগলের হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানিকে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি গরু-ছাগল আসছে। সকাল থেকে ছোট-বড়-মাঝারি আকারের গরু, কয়েক বছর লালন পালনের পর বিক্রির জন্য হাটে তুলেছেন খামারিরা। এদিন সরবরাহ বেশি থাকায় হাটের আশেপাশেও গরু বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন ক্রেতারা।
হাটে ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল বেশি। বেচা বিক্রিও হয়েছে অনেক। আবার অনেকে দেখেছেন, যাচাই করছেন দাম।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ছোট আকারের দুই থেকে চার মন ওজনের গরু, বিক্রি হয়েছে ষাট হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে। মাঝারি আকারের চার থেকে ছয় মন ওজনের গরুর দাম,১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে। ছয় থেকে ১০ মন ওজনের গরু, ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।
উপজেলার বারাসাত গ্রামের নজু মোল্লা জানান, ইখড়ি গরুর হাটে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার গরুর চাহিদা বেশি। যারা ছোট গরু বাজারে এনেছেন তারা কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন। বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় বিক্রিও কম। খুব বেশী লাভ হচ্ছে না।
উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামের খামারী কাইনাত শিকদার বলেন, পশু পালনে খরচ বেড়েছে কিন্তু সে তুলনায় মিলছে না দাম। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর ২ হাজার টাকায় যে খড় পাওয়া যেত এবছর তার দাম ৩ হাজার টাকা। ভূষি, খুদ, কুড়ার দামও প্রায় আগের তুলনায় ৫০ ভাগ বেড়েছে। খরচ বাড়লেও গরুর দাম আগের মতোই।
একই গ্রামের রসূল মোল্লার ভাষ্য, বৈরি আবহাওয়ার মধ্য ক্রেতা সমগম বেশি। এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে যারা বড়-বড় গরু কিনতেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে তাদের বেশিরভাগ পলাতক। ফলে বাজারে গরু বেচাকেনা কিছুটা কম। এ কারণে বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা। ইদু বিশ্বাস নামের এক ব্যাপারী বলেন, যারা পলাতক তারা অনেক টাকার মালিক ছিল। অনেকগুলো কোরবানি দিত। বড় থেকে শুরু করে পাতি নেতারাও গরু কিনত। সেই অংশটা বাজারে না আসায় চাঙ্গা ভাবটা নেয়।
ক্রেতা মাসুদ শেখ জানান, সবাই এক ধরনের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বড় অংকের টাকা খরচ করতে চাচ্ছে না। তারপরেও বাজারে পর্যাপ্ত গরু আসছে। কেনাবেচাও খারাপ না, ভালো।
উপজেলার জয়সেনা এলাকার নিজাম খা বলেন, বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে ইখড়ি গরুর হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে। হাটে ঘুরে-ঘুরে গরু দেখছি। বাজেট আর পছন্দ মতো হলে তবেই কিনব।ইখড়ি গরু- ছাগলের হাটের ইজারাদার মিল্টন মুন্সী বলেন,হাটে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন।
এছাড়াও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে আগামী সোমবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্বেচ্ছাসেবকরা সব সময় মাঠে থাকবেন।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে হাট কমিটির লোকজন ও পুলিশ তৎপর আছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস