যশোরের বেনাপোল পুটখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জিয়ারুল ইসলাম জিয়া বেনাপোল পোর্ট থানার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের সুলতান মোড়লের ছেলে। একই সাথে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ১৫ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। রোববার যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন।
২০১৩ সালের ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় শার্শা উপজেলার পুটখালীর বারোপোতা গ্রামের আকবর আলীর বাড়ির সামনে সন্ত্রাসীরা গুলি করে, বোমা হামলা ও কুপিয়ে হত্যা করে চেয়ারম্যান রাজ্জাককে। এ ঘটনায় রাজ্জাকের ছেলে হাসানুজ্জামান ১০ জনের নামসহ অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকে পুলিশ রাজ্জাকের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তাও দেয়।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফফারের সাথে আধিপত্য নিয়ে পূর্বে দ্বন্দ্ব ছিলো আব্দুর রাজ্জাকের। এছাড়া সিরাজুল নামে আরেকজনের সাথে পুটখালী হাট নিয়ে বিরোধ ছিলো। এছাড়া মেম্বর মোমিনুর রহমানের সাথে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে রাজ্জাককে হত্যা করা হয়েছে। পরে মামলাটি পর্যায়ক্রমে এসআই শরীফ, হাবিবুর রহমান ও আবুল খায়ের মোল্যা তদন্ত করেন। একপর্যায়ে ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। ২৫জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন আদালতে জবানবন্দি দেন।
রোববার মামলার রায় ঘোষণার দিনে আসামি জিয়ারুল ইসলাম ওরফে জিয়ার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাজা প্রদান করেন আদালত। একই সাথে অপর ১৫ জনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস প্রদান করেন আদালত। এসময় রাষ্টপক্ষের স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা উপস্থিত ছিলেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, বেনাপোল মহিষাডাঙ্গা গ্রামের হযরত মল্লিকের ছেলে ওবায়দুল ওরফে অবায়, গুড়ে গম্বুজের ছেলে রফিকুল ইসলাম, পাচু মোড়লের ছেলে নুরু, কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল গফ্ফারের ছেলে মাহবুব, পুটখালী গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে তরিকুল ইসলাম, কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে হারুন অর রশিদ, শীবনাথপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে মোমিনুর রহমান, মহিষাডাঙ্গার পাচু মোড়লের ছেলে আলা, মোশারফ মোড়লের ছেলে রয়েল, জহির মল্লিকের ছেলে মনিরুল, কৃষ্ণপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মশিয়ার, বারোপোতা গ্রামের আহম্মদ আলী ওরফে কেলে আহম্মেদের দুই ছেলে আল আমিন ও রুহুল আমিন, দৌলতপুর গ্রামের শেখ আব্দুল্লার ছেলে মেহেদী হাসান সীমান্ত এবং বারপোতা গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে ইউসুফ মোড়ল।
থুলনা গেজেট/এনএম