তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানার আওতাধীন এরশাদ নগর এশিয়া পেট্রোল পাম্পের সামনের মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
এর ফলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বন্ধ হয়ে আছে সড়কের উভয় পাশের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষজন। গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যস্থলের দিকে যাচ্ছেন অনেকে।
সড়ক অবরোধ করা গার্মেন্টস শ্রমিকরা বলছেন, তিন মাস ধরে গার্মেন্টসের মালিকপক্ষ বেতন দিচ্ছে না। বাকি রয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের ওভারটাইমের টাকা, তিন বছরের ছুটির টাকাও। বারবার আশ্বাস দিয়েও তারা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেককেই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
মামুন হোসেন নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিক বলেন, বেতন দিয়ে দেওয়া হবে এমন আশ্বাসে আমাদের তিন মাস ধরে ঘোরানো হচ্ছে। চলতি মাসসহ মোট চার মাসের বেতনের টাকা বাকি পড়েছে। এর আগের দুই মাসে ওভারটাইমের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। আমরা চাই প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে যেন শ্রমিকদের বেতনের টাকা পরিশোধ করা হয়। আগের বকেয়াও পরিশোধ করতে হবে।
আলেয়া বেগম নামের আরেক শ্রমিক বলেন, নিরুপায় হয়ে আমরা সড়ক অপরাধ করেছি। তিন মাস ধরে আমরা বেতন পাচ্ছি না। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি। গত সপ্তাহে আমাদেরকে সাত দিনের মধ্যে বেতন দেওয়া হবে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আট দিন পার হলেও এখনও বেতন পাইনি। তাই সড়ক অবরোধ করেছি। এখন আমাদের একটাই দাবি, যেন দ্রুত সব বেতন-ভাতা বকেয়া পরিশোধ করা হয়।
অপরদিকে সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় অবরোধ থাকায় সড়কের উভয় পাশের যানজট কয়েক কিলোমিটার ছাড়িয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য কিংবা সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবরোধ স্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।
জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, টঙ্গীর সিজন্স ড্রেসেস গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কয়েকটি দাবি তুলে আন্দোলন করছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য কারখানা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম