নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকার স্বীকৃতিতে পাঁচ নারী পেলেন এবারের বেগম রোকেয়া পদক। বৃহস্পতিবার রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক বিতরণ করেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যুক্ত হন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। তার পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা পদক তুলে দেন। পদকপ্রাপ্তদের চার লাখ টাকার চেক, রেপ্লিকাসহ একটি ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক এবং সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লা জেলার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ এবার মরোণোত্তর রোকেয়া পদক পেয়েছেন। নারী শিক্ষায় অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া বেলা এবং নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকার জন্য যশোর জেলার অর্চনা বিশ্বাস পেয়েছেন এ পদক। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণে ভূমিকার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট জিনাত হুদা এবং পল্লী উন্নয়নে ভূমিকার জন্য কুষ্টিয়ার গবেষক সারিয়া সুলতানাকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অবদান স্মরণ করে প্রতিবছর এ পুরস্কার দেয় বাংলাদেশ সরকার।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের একই দিনে কলকাতার সোদপুরে তার মৃত্যু হয়। রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় নারীর সমান অধিকারের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন মহিয়সী এই নারী। মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ইত্যাদি কালজয়ী গ্রন্থে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সমাজের কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন তিনি। বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পণ প্রথা, ধর্মের অপব্যাখ্যাসহ নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন রোকেয়া।
মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে নারীকে গৃহকোণে আবদ্ধ রাখার ধ্যান-ধারণা পাল্টাতে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তার দেখিয়ে দেওয়া পথ ধরেই বাংলাদেশে নারীমুক্তি আন্দোলন চলছে।
রোকেয়া দিবস ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এনএম