খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২৭ জুন, ২০২৪

Breaking News

  বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের হেলপারসহ নিহত ২

বৃষ্টি আইনে ২৮ রানের হার দিয়ে সুপার এইট শুরু বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের তিনটিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর সবকটি জয়ে বড় অবদান ছিল বোলারদের। এবার সুপার এইটে এসে ব্যর্থ তাসকিন আহমেদ-মুস্তাফিজুর রহমানরা। তাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নূন্যতম লড়াইটুকুও করতে পারেনি বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডিএলএস মেথডে ২৮ রানের জয় পেয়েছে অজিরা।

শুক্রবার (২১ জুন) স্যার ভিভিয়ান রিচার্ড স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন শান্ত। তাছাড়া ৪০ রান এসেছে হৃদয়ের ব্যাট থেকে।

জবাবে খেলতে নেমে ১১ ওভার ২ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। এরপর বৃষ্টিতে আর খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। অজিদের হয়ে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। বাংলাদেশের হয়ে ২৩ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন রিশাদ হোসেন।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত শুরু পায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই শেখ মেহেদিকে রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি হাঁকান ডেভিড ওয়ার্নার। এই অজি বোলারদের থিতু হওয়ারই সুযোগ দেননি। আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেডও একই পথে হেটেছেন। দুই ওপেনারের সাবলীল ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া।

পাওয়ার প্লের পরপরই রিশাদ হোসেনকে বোলিংয়ে আনেন শান্ত। রিশাদের ওভারের দ্বিতীয় বল হওয়ার পর ম্যাচে হানা দেয় বৃষ্টি। অবশ্য সেটার স্থায়িত্ব ছিল দুই-তিন মিনিট। এরপর মাঠ প্রস্তুতের কাজও চলছিল। তবে মিনেট দশেক পরই আরেক দফা বৃষ্টি নামে। সবমিলিয়ে ২০ মিনিটের মত খেলা বন্ধ ছিল।

বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে ট্রাভিস হেডকে বোল্ড করেন এই লেগি। সাজঘরে ফেরার আগে ২১ বলে ৩১ রান করেছেন এই ওপেনার। নিজের পরের ওভারেও উইকেটের দেখা পেয়েছেন রিশাদ। এই লেগিকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ১ রান করা মিচেল মার্শ।

এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল উইকেটে এসে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন। একই কাজ করেছেন ওয়ার্নারও। তাতে ১২তম ওভারেই দলীয় শতক স্পর্শ করে তারা। তবে এরপরই অ্যান্টিগায় আরও একবার বৃষ্টির হানা। তাতে ম্যাচ আর মাঠে গড়ায়নি।

এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরেছেন তানজিদ হাসান তামিম। তৃতীয় বলটি স্টাম্পের ওপর ফুললেংথে করেছিলেন মিচেল স্টার্ক। সেখানে সময়মতো ব্যাট নামাতে পারেননি তানজিদ তামিম, ব্যাটের নিচের অংশে লেগে বল ঢুকেছে স্টাম্পে। তিন বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। টানা দুই ইনিংসে খেলেন ডাক।

তানজিদ তামিমের বিদায়ের পর তিনে নেমে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আজ শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন। তবে আরেক প্রান্তে লিটন ধীরগতির ব্যাটিং করেছেন। তাতে পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট না হারালেও রানের গতি বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬ ওভার শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান তুলে টাইগাররা।

পাওয়ার প্লের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন। শুরু থেকেই ভুগতে থাকা লিটনকে শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা। নিজের খেলা প্রথম ৯ বলে কোনো রান নিতে পারেননি এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন তিনি। জাম্পাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ১৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

রিশাদ হোসেনকে চারে নামিয়ে বড় চমকই দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে বড় সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না এই তরুণ। মূলত রানের গতি বাড়াতেই রিশাকে ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে উইকেটে পাঠিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু তিনি টিকতে পারলেন কেবল ৪ বল। ২ রান করে ম্যাক্সওয়েলের বলে শর্ট থার্ডে ধরা পড়েছেন তিনি।

শান্ত-হৃদয়ের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি বাংলাদেশের

আসর জুড়ে রান খরায় ভোগা শান্ত আজ দারুণ শুরু পেয়েছিলেন। চেষ্টা করেছেন দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করার। নিজের পরিকল্পনায় সফলই ছিলেন বলা যায়। এগোচ্ছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটির দিকে। তবে কাটা পড়লেন ৪১ রানে। ইনিংসের ১৩তম ওভারের শেষ বলে জাম্পাকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক।

দ্রুত ফিরেছেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে সাকিব ফিরেছেন ১০ বলে ৮ রান করে। পরের ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়েছেন প্যাট কামিন্স। পরের বলেই শেখ মেহেদিকেও ফিরিয়েছেন এই পেসার। আসরে প্রথমবার খেলতে নেমে গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন তিনি। ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভানা জাগান কামিন্স। ২০তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে প্রথম বলেই হৃদয়কে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি। দ্বিতীয় অজি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন কামিন্স।

শেষ ওভারে সাজঘরে ফেররা আগে ২৮ বলে ৪০ রান করেছেন হৃদয়। তাছাড়া শেষদিকে নেমে ৭ বলে অপরাজিত ১৩ রান করে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে সাহায্য করেছেন তাসকিন আহমেদ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!