বাগেরহাটের চিতলমারীতে বৃষ্টিতে সবজি ও মাছের প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পর দিন যত যাচ্ছে সবজির ক্ষতির পরিমান তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টিতে এ উপজেলার কমপক্ষে সাড়ে ১০ হাজার কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ।বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত-আল-মারুফ ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে চাষিদের দাবি ক্ষয়ক্ষতির এ পরিমান দ্বিগুন হবে। এ ক্ষতির কারণে ঋণগ্রস্থ কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত-আল-মারুফ জানান, এই উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। এখানের মোট আবাদি জমির পরিমান প্রায় ৩৫ হাজার একর। গত তিন দিনের বৃষ্টিতে এখানে ধান, পান, টমেটো, বরবটি, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক হিসেবে ১৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে। এ ক্ষতির পরিমান আরো বাড়বে।
চিতলমারী সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ জানান, এ উপজেলায় ১৬ হাজার মৎস্য ঘের ও ৬ হাজার ৯৫৮ টি পুকুর রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ঘেরে বাগদা এবং ১৩ হাজার ৫০০ ঘেরে গলদা চিংড়ির চাষ হয়। মাছ চাষিরা উভয় ঘের ও পুকুরে চিংড়ি মাছের সাথে সাদা মাছের চাষ করেন।
এখানের চাষিরা বছরে ৫ হাজার মেট্রিকটন গলদা চিংড়ি, ৩ হাজার মেট্রিকটন সাদা মাছ ও ৪০০ মেট্রিকটন বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করে থাকেন। গত তিন দিনের অতি বৃষ্টিতে এ উপজেলার সাড়ে ৫ হাজার চিংড়ি ঘের ও ৩০০ পুকুর ভেসে গেছে। এতে চাষিদের কমপক্ষে ১ কোটি ২১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
উমাজুড়ি গ্রামের মাছ চাষি স্বপন মন্ডল, কুরমুনি গ্রামের সবজি চাষি হৃদয় বসু বুদ্ধ, শ্যামপাড়া গ্রামের প্রকাশ মাঝি, মৃনাল বৈরাগী, প্রদীপ বৈরাগী, শ্রীরামপুর গ্রামের তাপস ভক্ত, পারডুমুরিয়ার উত্তম বাড়ৈ ও দূর্গাপুর গ্রামের অরুন সরকারসহ অনেক চাষি বলেন, ‘তিনদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে আমাদের ঘেরগুলো তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। নেটজাল ও পাটা দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারিনি। আমরা এখন দেনার দায়ে জর্জারিত। দেনা পরিশোধ করব কি ভাবে।’
খুলনা গেজেট/এএজে