প্রতিবার সংবাদ সম্মেলনে এলে মলিন হয়ে যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মুখ। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়ক তিনি, অনিচ্ছা থাকলেও সিরিজ শুরুর আগে সাংবাদিক বৈঠক সামলাতে হয় তাকে। প্রতিবারই আশার বুলেন ফোলাতে বলেন, আখেরে লাভ হচ্ছে না কিছুই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, বিশ্ব মঞ্চে বড় দলগুলোর বিপক্ষে পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙতে চান। সেটি তো হয়নি, উল্টো বেকায়দায় পড়ে ঘরে ফিরতে হয়েছে।
দিন তো আর থেমে থাকে না! তবে ভাগ্য যে বদল হচ্ছে না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজেদের খেলা শেষ ৮ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ দল। প্রতিবারই পরাজিত দলের নাম বাংলাদেশ, আর পরাজিত অধিনায়কের নাম মাহমুদউল্লাহ। এবার নতুন চ্যালেঞ্জ টাইগারদের। আফগানিস্তানকে আতিথ্য দেবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি মাঠে গড়াবে আজ (বৃহস্পতিবার)।
এই সিরিজ দিয়েই আবারো পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙার ইঙ্গিত টাইগার দলপতির। মাহমুদউল্লাহ বলছিলেন, ‘আশা তো অবশ্যই জেতার। আমি সবসময় বলি, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এমন একটা ফরম্যাট যেকোনো দিন যেকোনো দল জিততে পারে। আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা প্রথম ম্যাচটা ফোকাস করছি। জয় দিয়ে শুরু করতে চাই।’
চাওয়ার সঙ্গে পাওয়া মেলানো সহজ নয় মোটেও। এই ফরম্যাটের পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে কথা বলছে। আফগানদের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতে মাত্র ২ জয় বাংলাদেশ দলের। আফগানিস্তান জিতেছে ৬ ম্যাচে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের র্যাঙ্কিংয়েও ওদের অবস্থান উপরের কাতারে।
তবে পরিসংখ্যা আর র্যাঙ্কিংকে পাত্তা দিতে নারাজ মাহমুদউল্লাহ, ‘টি-টোয়েন্টি এমন একটা ফরম্যাট, আপনি এক নম্বর দলের বিপক্ষে খেলুন আর ১০-১২ নম্বর দলের সাথে খেলুন, একটি পার্টনারশিপ ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। ওয়ানডে ও টেস্টে কামব্যাক করার সময় পাওয়া যায়, টি-টোয়েন্টিতে যায় না। যা করার সাথে সাথেই করতে হবে।’
কুঁড়ি ওভারের ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের ভাবনার কারণ ব্যাটিং বিভাগ। টপ অর্ডারের দৈন্যতা বেশ ভোগাচ্ছে। যে মিরপুরে হবে আফগানদের বিপক্ষে এই সিরিজ, সেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা শেষ ৩ ম্যাচের পাওয়ার-প্লেতে ওভারপ্রতি ৬ এর উপর রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এবার ওপেনিংয়ে বদল আনতে পারে স্বাগতিক শিবির। সুযোগ পেতে পারেন মুনিম শাহরিয়ার। অধিনায়ক কণ্ঠ তাই আত্মবিশ্বাসী।
মাহমুদউল্লাহ ভাষ্য, ‘আমাদের যে দল, পাওয়ারপ্লেতে ৪০-৪৫ রান তোলার জন্য যথেষ্ট ভালো। প্রতিদিন হয়ত এমন আকাশচুম্বী শুরু আপনি পাবেন না। তবে ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে অন্তত লড়াকু স্কোর, যেমন ১৫০-১৬০ নিয়মিত করতে হবে, তাহলে ম্যাচ জেতার সুযোগ থাকবে। যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই হোক। আমরা চেষ্টা করছি, কথাবার্তা বলছি, ইনশাআল্লাহ্ উপায় খুঁজে পাব।’
সব কথা আর হিসেবের মূলে উইকেটের চরিত্র। স্পিন উইকেটের ফাঁদে ফেলে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডকে বোকা বানানো গেলেও অফগানদের বিপক্ষে সে উপায় নেই। স্পিন শক্তিতে এগিয়ে তারায়। এজন্য পেসারদের সহায়ক উইকেট দিয়ে প্রতিপক্ষ ঘায়েল করতে চায় বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আশা করি ভালো উইকেট, স্পোর্টিং উইকেট হবে। বোলারদের পাশাপাশি ব্যাটাররাও সুবিধা পাবে। একটু সময় কাটানো গেলে ব্যাটাররা ভালো সময় কাটাতে পারবে।’
দুই দলের মাঠের লড়াই শুরু হবে বিকেল ৩টায়। সরাসরি দেখা যাবে টি স্পোর্টস আর গাজী টিভির পর্দায়।
এক নজরে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ :
লিটন কুমার দাস, মুনিম শাহরিয়ার, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।