চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে তাইওয়ানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ইতালি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৪ কোটির গণ্ডি। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৩ লাখ ৩০ হাজার।
রোববার (১২ জুন) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯২৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে তিনশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৮৫ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৭৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় দেড় লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭১২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে তাইওয়ানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১১ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৬৬৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৮ জনের।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২৭ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩২ হাজার ৩৩২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬৭৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৪ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন এবং মারা গেছেন ৭৪ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৫ হাজার ৪১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৮২৮ জন মারা গেছেন।
উত্তর কোরিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৮১০ জন। অন্যদিকে একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪২৮ জন এবং মারা গেছেন ১০ জন।
জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৬৪২ জন এবং মারা গেছেন ৬৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৬৮ লাখ ৪৭ হাজার ৪২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪০ হাজার ১৮০ জন মারা গেছেন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭২ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৬২৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৩ লাখ ৭৩ হাজার ১৮৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৫ জনের।
ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ১০৪ জন এবং মারা গেছেন ৬০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৭৯০ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯১ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ৭৫৭ জন।
কানাডায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮২৫ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫০১ জন এবং মারা গেছেন ২৮ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৮৬০ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন। একই সময়ে গ্রিসে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৩৯ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬১ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।