এই দিনটার জন্য কতদিনের অপেক্ষা শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের? মনে করতে পেছন ফিরে যেতে হবে অনেকটা। ক্রিকেটারদের পদচারণা ছিল আগেও। কিন্তু এমন উৎসব ভাব কি ছিল? আর যাই হোক প্রতিযোগীতামূলক ম্যাচের আবহটা যে একেবারেই অন্যরকম। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের আনাগোনা ছিল নিয়মিত দৃশ্য। সবসময় ব্যস্ত এই মাঠ একেবারেই নির্জন ছিল কিছুদিন। করোনা মহামারিতে থমকে গিয়েছিল সব। এরপর ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করেছেন, ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে যেটা গড়িয়েছে দলগত অনুশীলনেও।
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলেছেন দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও। তবে তাতে ‘প্রতিযোগীতা’ বলতে যা বুঝায় তা প্রায় ছিলই না। তবে এবার তা ফিরছে। জাতীয় দল ও হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের ক্রিকেটারদের নিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে তিন দলের প্রেসিডেন্টস কাপ নামের ওয়ানডে টুর্নামেন্ট।
যেখানে প্রথম দিন নাজমুল হোসেন শান্তের দলের বিপক্ষে লড়বেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ একাদশের ক্রিকেটাররা। রোববার (১১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় মিরপুরে শুরু হবে দিবা-রাত্রির এই ম্যাচ। যার আগে শনিবার মিরপুরে দেখা গেল কোচদের ব্যস্ততা। শ্রীলঙ্কা সফর বাতিল হলেও এখনো বাংলাদেশেই আছেন টাইগারদের কোচিং স্টাফরা।
আপাতত তাদের ব্যস্ততা প্রেসিডেন্টস কাপে। হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো যেখানে থাকবেন পর্যবেক্ষকের ভূমিকাতে। ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক আর পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে এইচপি কোচ টবি রেডফোর্ড থাকবেন তিন দলের কোচের ভূমিকাতে।
শান্ত একাদশে অধিনায়কের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনের দেখা যাবে জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন খেলা সৌম্য সরকারকে। মিডল অর্ডারও বেশ শক্ত তাদের। পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান আফিফ হোসেনদের সঙ্গে আছেন দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
বোলিংয়ে তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ চৌধুরি রাহি ও আল আমিনের মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে আছেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, রিশাদ হোসেনের মতো তরুণেরা। ব্যাটিং ও বোলিং মিলিয়ে বেশ ভারসম্যপূর্ণ দল শান্ত একাদশ। ব্যাটিং বোলিং ছাপিয়ে দলটির অধিনায়ক অবশ্য বলছেন, তরুণদের নিয়ে গড়া ফিল্ডিং বিভাগটা নিয়ে বেশি খুশি তিনি।
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশায় তিনি ভালো খেলা দেখতে চান তিন বিভাগেই, ’সব মিলিয়ে আমাদের দল ভালো হয়েছে। তিনটা দলই খুব ভালো। আমাদের যেটা ইতিবাচক দিক ফিল্ডিং বিভাগটা খুব ভালো যেহেতু দলে অনেক তরুণ। সঙ্গে বোলিং ব্যাটিং তো আছেই। আশা করছি তিন বিভাগেই ভালো কিছু হবে। ’
অন্যদিকে রিয়াদ একাদশে অধিনায়কের সঙ্গে ব্যাট হাতে ভরসা দেবেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক ও লিটন দাসের মতো অভিজ্ঞরা। বোলিংয়ে রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেনরা থাকবেন দলের বল হাতে ভরসা হিসেবে। এই দলেও নজর থাকবে মাহমুদুল হাসান জয়, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও রাকিবুল হাসানের মতো তরুণদের দিকে।
নিজের দল নিয়ে আশাবাদি রিয়াদও, ‘দল মাশাআল্লাহ খুব ভালো হয়েছে। টপ অর্ডার টু লেট মিডল অর্ডার, স্পিনিং সাইড, পেস বোলিং ইউনিটও খুব ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বেশ ভারসম্যপূর্ণ দল। আশা আছে তো অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হবার ইনশাআল্লাহ।’
এই টুর্নামন্টের বিশেষত্ব আরেকটা জায়গায়। এই আসর দিয়েই মাঠে ফিরবেন বিশ্বজয়ী যুবারা। বেশির ভাগ ক্রিকেটারের জন্যই সিনিয়রদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা হবে এই প্রথমবার। তবে সব ছাপিয়ে আবারও শেরে বাংলার আকাশে জ্বলে উঠবে ফ্লাডলাইটের আলো। সরাসরি দেখা যাবে দেশের ক্রিকেটারদের খেলা। দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য এর চেয়ে বেশি স্বস্তির খবর তো আর কিছু হতে পারে না।
খুলনা গেজেট/এএমআর