দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) একটি অন্যতম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য, নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ, অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন সম্বলিত খানজাহান আলী থানার তেলিগাতীতে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান।
২০২০-২০২১ এ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে ৪৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তৃতীয় স্থানে ছিল কুয়েট। নাসার স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কুয়েট শিক্ষার্থীদের টিম। হাই ইম্প্যাক্ট জার্নালে রিসার্চ পেপার প্রকাশের জন্য কুয়েটে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে ভাইস- চ্যান্সেলর আওয়ার্ড।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পরিধি, শিক্ষার গুণগতমান, গবেষণাধর্মী কার্যক্রম যেমন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি নতুন নতুন বিভাগ এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বমানের র্যাঙ্কিংয়ে ভালো অবস্থানে পৌঁছানোর পরিকল্পনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে খুলনা গেজেটকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৬৭ সালে ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ৩ জুন থেকে প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর নাম পরিবর্তন করে বিআইটি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর পর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এটি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ( কুয়েট) হিসেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নাম উঠায়। মোট ১১৭ দশমিক ৩০২ একর জায়গার উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আনিছুর রহমান ভূঁইয়া খুলনা গেজেটকে বলেন, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩ টি ফ্যাকাল্টি ও ৩ টি ইন্সটিটিউট রয়েছে, বিভাগ রয়েছে ২০ টি । ১৬ টি বিভাগে বর্তমানে অধ্যায়নরত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ হাজার ৪৪৫ জন। এদের মধ্যে আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজার ৫৪৮ জন, পোস্ট গ্রাজুয়েটে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ হাজার ৫৮৭ জন, পিএইচডি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২৭ জন এবং ইনস্টিটিউট এ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৩ জন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সার্কভুক্ত এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী অর্জন করেছেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১৩ জন নেপালি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কোন বিদেশী শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১টি ছাত্রী হলসহ ৬ টি ছাত্র হল রয়েছে। এগুলো হলোঃ বেগম রোকেয়া হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেরে বাংলা এ কে এম ফজলুল হক হল, খান জাহান আলী হল, লালন শাহ হল, ড. এম এ রশিদ হল ও অমর একুশে হল। ১টি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীসহ ১৮ টি ডিপার্টমেন্টাল লাইব্রেরী রয়েছে। ১ টি ইংরেজি ভাষায় সহ মোট ল্যাবরেটরী রয়েছে ৪১ টি।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩৬৮ জন শিক্ষক তাদের জ্ঞানের মশাল প্রজ্জ্বলন করে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২১৭ জন কর্মকর্তা এবং অফিস স্টাফ রয়েছে ৩৭৪ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো এবং একাডেমিক কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে অধিগ্রহণকৃত ১৬ দশমিক ৩৫২ একর সম্প্রসারিত ক্যাম্পাস নির্মাণে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে ইতিমধ্যে সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়ে গেছে বলে এ প্রতিবেদককে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ জুলফিকার হোসেন।
খুলনা গেজেট / আ হ আ