চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১৬০০ মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৬১ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, ইতালি, রাশিয়া ও ফ্রান্স। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ কোটি ৭১ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৩ লাখ ২৫ হাজার।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৫৯৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৯৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬১ হাজার ৪০৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২২ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৫৮২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৩২ জন এবং মারা গেছেন ২৭১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৬৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৩৫ হাজার ১৯ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটি করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০১ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৬১৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৭৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৭০১ জনের।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৯ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৮০ হাজার ২২৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৬ লাখ ২০ হাজার ৯৪১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৩ জনের।
উত্তর কোরিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬২০ জন। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৫১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭১ জন মারা গেছেন।
জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৪৭ জন এবং মারা গেছেন ১৫৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৮০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৮ জন মারা গেছেন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৯ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৩ লাখ ৬২ হাজার ১০৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৬ জনের।
যুক্তরাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৮৮৪ জন এবং মারা গেছেন ৮৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩ জন মারা গেছেন। একইসময়ে মেক্সিকোতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১১০ জন এবং মারা গেছেন ১৯ জন
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৮০২ জন এবং মারা গেছেন ৭৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬৮ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩ জন এবং মারা গেছেন ২৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৩২০ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ২০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৪ হাজার ৩০৫ জন মারা গেছেন।
একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৮৮ জন এবং মারা গেছেন ২১ জন।
ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৩৬১ জন এবং মারা গেছেন ৮০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৯ জন মারা গেছেন।
একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৫১৯ জন এবং মারা গেছেন ২৪ জন।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৭ হাজার ৫৪ জন।
মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৬ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ৭১৫ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ২০৮ জন এবং মারা গেছেন ৫৮ জন। একই সময়ে গ্রিসে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪৯৬ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৬১৮ জন এবং মারা গেছেন ৮ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।