চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১৭০০ মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে পৌনে ৭ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩৯ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৮২ হাজার।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৮৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দেড় শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ২৯২ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৬৮ হাজার ২২৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১৮ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪১০ জন এবং মারা গেছেন ২৯৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৭ হাজার ৮৮৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৭১৯ জন এবং মারা গেছেন ২৪৫ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৬৮ হাজার ১১১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ২৮১ জন এবং মারা গেছেন ১০৮ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৭ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজার ৩৯ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৩৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৮ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৮৩৭ জন এবং মারা গেছেন ৪৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৪৪ লাখ ২৮ হাজার ৭৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮০৬ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৪৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৮৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৫ হাজার ১২৭ জন মারা গেছেন। একইসময়ে তাইওয়ানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৭ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৭ হাজার ২৭৫ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭১ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৯১৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার ৫২১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮২৯ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯০৮ জন এবং মারা গেছেন ২০ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৭৬ জন এবং মারা গেছেন ৮৩ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২ জন এবং মারা গেছেন ২৯ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ২৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।