চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২১ লাখ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে পেল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৯ কোটি ৫৪ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৩১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দুই হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ লাখ ৭ হাজার ৪৬৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৫৪ লাখ ২১ হাজার ৬১৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪৪ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৮২৪ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ৮০ লাখ ২৭ হাজার ৬৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৫১ হাজার ৪০০ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯০৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার ২১২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১২ হাজার ১৮৭ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৮ হাজার ৭২৪ জন এবং মারা গেছেন ৪৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪১ হাজার ৫২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৪৪ জন এবং মারা গেছেন ২২২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৫১ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫০৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৬৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৭৫ জন এবং মারা গেছেন ১১৬ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৯০ জন এবং মারা গেছেন ৩৯৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ ৭৯ হাজার ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৭১ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৬ জন এবং মারা গেছেন ১৩৫ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ৭৫৯ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৩ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৪২৬ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৫০ লাখ ১১ হাজার ৯৯০ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮২ হাজার ১৭ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৩৭ জন, পোল্যান্ডে ৪৩৩ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৩৯ জন, হাঙ্গেরিতে ৮৩ জন এবং বুলগেরিয়ায় ১৫৭ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৩৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮১ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
খুলনা গেজেট/এনএম