চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ৪০০-র বেশি মানুষ। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে সাড়ে ৩ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন-মেক্সিকো-ফিলিপাইন। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ কোটি ৪০ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ লাখ ১৪ হাজার।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ৪০৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দেড় হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫১ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪০ হাজার ৯১৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৮৫ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২১৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৮২৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৮৬ জনের।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৫১ জন এবং মারা গেছেন ১১০ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৭৯ লাখ ১১ হাজার ৪৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫৪৯ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। ইউরোপের এই দেশটিতে গত এক দিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ হাজার ৪৮ জন এবং মারা গেছেন ৩৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৮ হাজার ১৯৪ জনের।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৫১৭ জন এবং মারা গেছেন ৬৩ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৮ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ১২৯ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ৩১৮ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৭ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩০ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১২৫ জন, তুরস্কে ১৮৯ জন, ইউক্রেনে ৪০৩ জন এবং ফিলিপাইনে ৩০৯ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২১৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৮৯ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।