চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাত শতাধিক মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ৬ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে মেক্সিকো। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ইতালি, তাইওয়ান, ইসরায়েল, জাপান ও ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ কোটি ৫০ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা।
সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭২৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে তিন শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ২ হাজার ৯৬৫ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ কোটি ৫০ লাখ ২২ হাজার ৯৭৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ১০৯ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৯১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩১ হাজার ৮৫২ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে মেক্সিকো। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০৫ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৫৩৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬৬ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৩ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪২ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৯ হাজার ৮২৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৯১ হাজার ৩৫৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ২১ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৫৫৬ জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ২১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৫১ হাজার ৯৯৬ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ৩২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ২৬২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৫০ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৪৩৩ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ হাজার ২০৮ জন এবং মারা গেছেন ৭৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার ৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ইসরায়েলে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৫৮ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৫ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজার ৭৩৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৫৮৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৬ জনের। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮৩১ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৭ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭ হাজার ৫২৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার ২৫৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৫৫ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১৪ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৮ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯০ জন এবং মারা গেছেন ৩০ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৩০ জন এবং মারা গেছেন ২৯ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।