চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০ লাখ ১৫ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন পোল্যান্ড ও ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৩ কোটি ৫১ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৭২ হাজার।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজার ৩৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে তিন হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৯৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ লাখ ১৫ হাজার ১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১১ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ কোটি ৫১ লাখ ১৩ হাজার ৪০৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৯ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৭১৯ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৬৪ হাজার ৮৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৯ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৮৮ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩১ হাজার ২৫২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৮১২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২২ হাজার ৬৭৮ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪৩২ জন এবং মারা গেছেন ৪৩৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা গেছেন ৪৩৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৯ জন এবং মারা গেছেন ৩৭৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩৮ জন মারা গেছেন। একই সময়ে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৮৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১৩৮ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৯৮ জন এবং মারা গেছেন ১৯৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৬১০ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৫৮ জন এবং মারা গেছেন ১৮৮ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩১৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৫৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ৫৫১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ৫৭৮ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার ১১ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ২২৬ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৫৭ জন, হাঙ্গেরিতে ৯৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০০ জন, পোল্যান্ডে ৩৭৭ জন, কানাডায় ১৪৬ জন, স্পেনে ২৮৪ জন, আর্জেন্টিনায় ১৮৯ জন এবং ভিয়েতনামে ১৮৪ মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫৯ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ৪৬৯ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।