শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনার দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুর পরিসংখ্যানে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মহামারি শুরুর পর থেকে এই রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্স জানিয়েছেন এই তথ্য।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫২৬ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৪৮৮ জনের। আগের দিন বৃহস্পতিবার বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৪৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৯৯ জন।
অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে করোনা সংক্রমণ কমেছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৮২১ এবং মৃতের সংখ্যা কমেছে ৬১১ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার করোনার দৈনিক সংক্রমণের হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে এইদিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯৬ জন এবং এই রোগে মারা গেছেন ৩৯২ জন।
অন্যদিকে, ৬৮৭ জনের মৃত্যু নিয়ে দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে শুক্রবার শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া এদিন দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৯১৮ জন।
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে করোনায় সংক্রমণ-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে, সেসব হলো— জার্মানি (নতুন আক্রান্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৪৬ জন, মৃত্যু ৩০০ জন), ফ্রান্স (নতুন আক্রান্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭১ জন, মৃত্যু ১২১ জন), ইতালি (নতুন আক্রান্ত ৭৫ হাজার ৬১৬ জন, মৃত্যু ১৪৬ জন), জাপান (নতুন আক্রান্ত ৪৯ হাজার ৬৩ জন, মৃত্যু ১২৯ জন), ব্রাজিল (নতুন আক্রান্ত ৩৪ হাজার ৫৭৬ জন, মৃত্যু ২৫৯ জন) এবং রাশিয়া (নতুন আক্রান্ত ২৫ হাজার ৩৮২ জন, মৃত্যু ৩৯৮ জন)।
বিশ্বে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯২ জন। এই রোগীদের মধ্যে করোনার মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ৫ কোটি ৯১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮১ জন এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন ৫৯ হাজার ৫১১ জন। এছাড়া, শুক্রবার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৩৬৯ জন।
২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৭ জন এবং এই রোগে মারা গেছেন মোট ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ১৮৯ জন। পাশাপাশি, এই সময়সীমার মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৩৯ কোটি ৯০ লাখ ৭৪ হাজার ৮৮২ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।