খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ পৌষ, ১৪৩১ | ৮ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে অন্তবর্তী সরকার
  কাল থেকে বিডিআর বিদ্রোহের আসামীদের বিচার হবে কেরানীগঞ্জ কারাগারে অবস্থিত অস্থায়ী আদালতে : প্রজ্ঞাপন
  উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে খালেদা জিয়া, স্বাগত জানিয়েছেন তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান

বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া

গেজেট ডেস্ক

সাত বছর পর আবার লন্ডনে যেতে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁকে বিদায় জানাতে পথে পথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল নেমেছিল। হাজার হাজার নেতা-কর্মী ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাঁদের নেত্রীকে বিদায় জানান।

খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত সোয়া আটটার দিকে গুলশানের বাসা থেকে ক্রিম কালারের একটি গাড়িতে করে রওনা দেন বিমানবন্দরের উদ্দেশে। গাড়িতে তাঁর পাশে ছিলেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান (সিঁথি)। গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ও তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, প্রয়াত ভাই সাইদ এস্কান্দারের সহধর্মিণী নাসরিন এস্কান্দারসহ আত্মীয়স্বজনেরা তাঁকে বিদায় জানান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বাসভবন থেকে রওনা হওয়ার পর সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডাম বাসা থেকে রওনা হয়েছেন। তিনি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীসহ সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।’

বাসা থেকে বের হয়ে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় পর রাত ১১টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছান বিএনপির নেত্রী। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সোমবারই ঢাকায় এসেছে, সেটিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টারমাকে রাখা হয়েছে।

বিমানবন্দরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাবেন। দলের চেয়ারপাসনকে বিদায় জানাতে বিকেল থেকেই বিমানবন্দর সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী। বিদায় জানানোর সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আগেই বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে তাতেও দুর্ভোগ পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। বিএনপির নেতা-কর্মীদের সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু নেতা-কর্মীদের অনেকে রাস্তায় নেমে আসেন।

বিএনপি জানিয়েছে, ঢাকা থেকে খালেদা জিয়া প্রথমে যাবেন যুক্তরাজ্যে। সেখানে তাঁকে ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে। গুলশান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তার এক পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

সাত বছর পর লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেখা হবে। লন্ডনে ছেলের বউ জুবাইদা রহমান ও নাতনি জায়মা জারনাজ রহমান খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, মা-ছেলের দীর্ঘ কাঙ্ক্ষিত এই সাক্ষাতে দেশ, দল ছাড়াও ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে অনেক কথাবার্তা হতে পারে।

বিএনপির চেয়ারপারসন সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। এরপর তাঁর আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি।

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর অসুস্থতা বাড়ে। এর মধ্যে কয়েকবার তিনি জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন। একাধিকবার তাঁর মৃত্যুর গুজবও ছড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তাঁর বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লিভার প্রতিস্থাপনের পর পুরো চিকিৎসায় কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা শেষ হলে বিএনপির চেয়ারপারসন আবার লন্ডনে যাবেন। সেখান থেকে সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করে তারপর দেশে ফিরতে পারেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!